1800 থেকে 1947 সন পর্যন্ত ইতিহাস বিধৃত হয়েছে পাঁচ খণ্ডের জাতীয় চরিতাভিধানে। অন্যান্য দেশের সমপর্যায়ের কাজের তুলনায় ভারতবর্ষে এ ধরণের প্রয়াস এই প্রথম। প্রায় 1400 ভারতীয় (এবং বিদেশী, যাঁরা ভারতকে স্বভূমি জ্ঞান করেছিলেন) যাঁরা উনিশ শতকের শুরু থেকে স্বাধীনতা অর্জনের সময় পর্যন্ত জাতিকে বরণীয় সেবা করেছেন, তাঁদের জীবনালেখ্য রইল এই পাঁচটি খণ্ডে। রাজনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান, সাংবাদিকতা, আইন ও সমাজসংস্কার, বাণিজ্য ও শিল্প প্রভৃতি সর্বক্ষেত্র থেকেই তাঁদের গ্রহণ করা হয়েছে। ন’ বছর লেগেছে এই বিশাল কাজটি সম্পূর্ণ হতে। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে বসে কাজ করে বত্রিশ জন গবেষণা-সহায়ক এই গ্রন্থাবলীর উপাদান সংগ্রহ করেছেন। জীবনালেখ্যগুলি প্রস্তুত করেছেন সাড়ে-তিনশ' লেখক, তাঁদের অনেকেই ভারতবর্ষের প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত সুপরিচিত ঐতিহাসিক। প্রায় শতাধিক লেখক যাঁরা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে গৌরব অর্জন করেছেন—তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রের ও রাজ্যের মন্ত্রীগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা, রাজ্যপাল-রাষ্ট্রদূত- হাইকোর্টের বিচারক-উপাচার্য-সাংবাদিক-সাহিত্যিক-বৈজ্ঞানিক-আইনজীবি-শিল্পপতি এবং সমাজসেবীরা। ইংরেজিতে 1972 সনে প্রকাশিত গ্রন্থাবলীর এই বাংলা সংস্করণে, পরবর্তীকালে গবেষণালব্ধ নতুন তথ্যসমূহ, ক্ষেত্র-বিশেষে সন্নিবিষ্ট হয়েছে। ভারতবর্ষের স্বাধীনতালাভের পঁচিশতম বার্ষিকীর আনন্দময় উপলক্ষে ইংরেজিতে প্রকাশিত জাতীয় চরিতাভিধানকে, জাতির উপযুক্ত উপহার হিসেবে, উৎসর্গ করা হয় তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশে যাঁরা জীবনের বিভিন্নক্ষেত্রে কাজ করে বিভিন্ন মতাদর্শ ও বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে আধুনিক ভারত গঠনে সাহায্য করেছেন। এর উদ্দেশ্য, স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মকে একথা মনে করিয়ে দেওয়া যে, আজ আমরা যা কিছু পেয়েছি তার জন্য পূর্ববর্তী-প্রজন্মের শ্রম ও ত্যাগের কাছে কৃতজ্ঞ হতে হবে আমাদের। পূর্বসূরীদের অমূল্য দানের উপর গুরুত্ব আরোপ এবং তাঁদের পবিত্র স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই জাতীয় চরিতাভিধানের আয়োজন। সঙ্গতভাবেই জাতীয় চরিতাভিধান উৎসর্গ করা হল আধুনিক ভারতের স্রষ্টাদের উদ্দেশে—এই চরিতাভিধান তাঁদের প্রতি বর্তমান প্রজন্মের শ্রদ্ধাঞ্জলি।