"সুখ সাফল্যের পথ নকশা" বইটির 'শুরুর কথা' অংশ থেকে নেয়াঃ সুখ-সাফল্য সকলের কাম্য। মানুষ চায় নিজের ভেতরে আর চারপাশে সুখ। জীবনে যা ঘটা উচিত বলে মনে করেন, তা না ঘটলেই আপনি নিজেকে ব্যর্থ ভাবেন। জীবন যেভাবে চলা উচিত বলে মনে করেন, সেভাবে না চললেই অখুশি হয়ে ওঠেন। যখন চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে মিল না হয়, তখনই আপনি অসুখী হন। প্রশান্তির মায়াবী আবেশ ছড়িয়ে দিতে চাই জীবনের বাঁকে বাঁকে। সাফল্যের আশায় মরীচিকার হাতছানিতে ছুটে চলি। ফলে, আমরা পথ চলি কিন্তু কোথাও পৌছাই না। গন্তব্য যেন শুধু দূরে সরে যায়। সবাই স্বপ্ন দেখে, কিন্তু সাফল্যের দেখা কজনে পায়? আমরা যা চাই, তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করে সর্বোচ্চ চেষ্টা করাটাই আমাদের কাজ। সফল হওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলাে আপনার শরীরে আনন্দ, মনে আনন্দ, আবেগে আনন্দ এবং জীবনীশক্তিতে আনন্দ থাকা। বেশিরভাগ মানুষ মনের বিরুদ্ধে কাজ করে। অথচ মনের মধ্যেই সুখ-সাফল্য বা ব্যর্থতা- সবকিছুরই শুরু। তাই মনের শৃঙ্খলা অতি জরুরি। আজকাল অনেক ‘গুরু’ এই বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন যে, সফলতা দুঃখের, সফলতা কষ্টের। এ কারণে অনেকেই হাল ছেড়ে দিচ্ছেন। তারা সফলতা আর চায় না। এটা মারাত্মক ভুল। মানুষ মহান স্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। স্রষ্টা আমাদের চারপাশে সবকিছু কতাে নিপুণ-নিখুঁত ও সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন। মানুষকে দেয়া হয়েছে বিবেক, বুদ্ধিমত্তা ও অমিত সম্ভাবনা। সফলতা তাে মানুষের জন্যই। আমরা আজ হতাশাকে শিল্পে পরিণত করছি। হতাশ হওয়া মানবাত্মার জন্য চরম অবমাননাকর। আমরা হতাশ হব না। নিজের ভেতরের অমিত সম্ভাবনাকে ব্যবহার করে সফল হব। বাজারে সাফল্য-বিষয়ক বইয়ের অভাব নেই। তারপরও কেন এই বই? গতানুগতিক চিন্তার বাইরে গিয়ে কিছু বলবার চেষ্টা করেছি। তবে, তা করেছি প্রজ্ঞাবানদের জ্ঞানের আলােকে। মানুষ ভালাে থাকুক, সুখে থাকুক, সাফল্যের সন্ধান পাক- এই আশাতেই এ বই লেখা। আমার অন্তরাত্মার ডাকেই এ বই লেখা। প্রজ্ঞাবান আর পূর্ণ সচেতন হলে, আপনার ভেতরের শক্তির পূর্ণ জাগরণ ঘটলেই আপনি সুখী হবেন। আপনাকে জাগিয়ে তােলার জন্যই এ বই। মন-মনন-চেতনায় সম্পূর্ণ সচেতন করে আপনাকে কর্মমগ্নতায় নিমগ্ন করার চেষ্টা করেছি। আলাে-আশা-ভালােবাসা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলােকে সফল জীবনযাপনের পথ নকশা আঁকতে চেয়েছি। কবিরা স্বপ্ন দেখেন; কবিতায় মানুষকে স্বপ্ন দেখান। তাই, কয়েকজন প্রিয় কবির কবিতায় ভালাে-মন্দ, সুখ-সাফল্যের বয়ান খোঁজ করেছি। প্রাসঙ্গিক ভেবে এ বইয়ে সেসব উদ্ধৃতি দিয়েছি।
আবু রেজা মাে. ইয়াহিয়া মূলত চিন্তাবিদ। স্বপ্ন দেখেন দরদী সমাজ ও মানবিক পৃথিবীর বিচিত্র তাঁর লেখার বিষয়- প্রকৃতি, মানুষ, মানুষের মন, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, সাফল্য, প্রশান্তি এবং মানবিক পৃথিবীর প্রত্যাশা। শৈশব থেকেই লেখালেখির সাথে সখ্য। সমাজ-সংস্কৃতি ও মানবকল্যাণ নিয়ে কাজ করেছেন রেড ক্রিসেন্ট সােসাইটি ও কচিকাঁচার আসরে যুক্ত থেকে। তুখােড় তার্কিক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। হয়েছেন আন্ত:হল। বিতর্ক প্রতিযােগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক। বিশ্লেষক হিসেবে দেশের ব্যাংকিং খাত, চলমান উন্নয়ন ও সমসাময়িক জাতীয় বিষয়ে নিয়মিত অংশ নেন টেলিভিশন টক-শােসহ বিভিন্ন আলােচনায়। লিখেছেন বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায়। সম্পাদনা করেছেন মাটি ও মানুষ পত্রিকা। তিনি ১৯৬৩ সালে মাগুরা জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আবু ইয়াহিয়া মােহাম্মদ আব্দুর রউফ। মাতা জামিলা খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ১৯৮৫ ও ১৯৮৬ সালে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন অভিজ্ঞ ব্যাংকার। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসােসিয়েশন ও বাংলাদেশ আইন সমিতির আজীবন সদস্য। তিনি রাশিয়া, ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ব্রুনাই, মায়ানমার এবং সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সিম্পােজিয়ামে অংশগ্রহণ করেন। সুখ কি সােনার হরিণ! ও সুখ-শান্তি-প্রশান্তি শিরােনামে তাঁর আরাে দুইটি বই প্রকাশের অপেক্ষায়।