আমার সামনে ইয়াং, স্মার্ট একজন তরুণ। আমি কিছুটা সময় তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ভাবছেন কেন? ‘স্যার’ শব্দটার সাথে উনাকে তেমন যায় না। আমার ধারণা ছিল ডাক্তার স্যার হবেন একজন বয়স্ক লোক। তার চোখে থাকবে চশমা, মাথায় সাদা-কালো চুল অথবা ফাঁকা। আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে স্যার নামের ভদ্র তরুণটিও আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। জামাল উদ্দিন ব্যাপারটা লক্ষ করে কাশি দিতে শুরু করলেন। আমি বুঝতে পারলাম তিনি কিছু বলতে চাইছেন। তাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উল্টো আমিও কাশি দিলাম। নার্স ভদ্র মহিলা ডাক্তার স্যারের কাছে এগিয়ে বললেন, স্যার পাগল দুটোকে কী করব? স্যার অনেকটা আঁতকে ওঠার মতো হয়ে বললেন, পাগল, কোথায় পাগল? নার্স বললেন, আপনার সামনে স্যার। স্যার নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, আমার কাছে নিয়ে এসেছেন কেন? আমি কি পাগলের ডাক্তার। নার্স বললেন, জি স্যার। একটু লিখে দিন মেন্টালে পাঠাতে হবে। আমাদের মেন্টাল হাসপাতালে নিতে নিতে আপনাদের কয়েকটা কথা বলি, পাগলের অনেক সুবিধা আছে। যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। পাগলকে কেউ ঘাটায় না। যদি পারেন একবার পাগল হয়ে দেখবেন। পাগল আর রাজার মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। যে একটা পার্থক্য আছে, তাহলো পাগলেরা থাকে রাস্তায় আর রাজারা থাকে রাজপ্রাসাদে। এই সামান্য পার্থক্য আমার কাছে মেটার করে না। ভাবছেন কী সব ভুল বকছি? না মোটেও ভুল বকছি না। আমার মনে হয় সব মানুষকেই একবার পাগল হয়ে দেখা উচিত। তা না হলে জীবনের অর্থটাই বোঝা যাবে না।
নিশাত ইসলাম, জন্মঃ ১৯৮২, পেশাঃ শিক্ষক, নাট্যকার, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট, পুরস্কারঃ চাঁদপুর গ্রুপ থিয়েটার পরিষদের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পুরস্কার-১৯৯৯। সাহিত্যে অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার-২০০৭ প্রদান করে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চিটাগাং। বাংলার সঙ্গীত সংগঠন কতৃক প্রদত্ত সেরা লেখিকা পুরস্কার-২০১৭। ইনডেক্স মিডিয়া স্টার এওয়ার্ডস-২০১৭। প্রকাশিত গ্রন্থঃ কবিতা, গল্প, ভ্রমণ কাহিনি ও উপন্যাস ৩৩টি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ ক্ষমা, ভালোবাসার কাজল, এখনো অনেক রাত, নীরব ভালোবাসা, বিবর্ণ বেলা, ভালোবাসি তাই, নষ্ট মন, ভালোবাসার সাত রং, সূর্যোদয়ের দেশে, মন (১ম ও ২য় খণ্ড), তবুও ভালোবাসি, অন্তরে শুধু তুমি, জয় বাহিনী, ভূত মামা, শুধু ভালোবাসি তোমায়, রানা ভাই এখন রিহ্যাবে, নিতু ও বোমা মফিজ, পালকি।