জীবনের ঐশ্বর্য বা রিক্ততার দৃশ্যপট ফুটে ওঠে একজন লেখকের সুনিপুণ কলমে। জীবনে এমন কিছু সত্য থাকে যা কারো কাছে প্রকাশ করা যায় না বা মানুষ প্রকাশ করতে চায় না। এই বইটি এমন কিছু বাস্তব সত্য প্রকাশের সাহসী প্রয়াস। একজনের অভিজ্ঞতা অপরজনকে অভিজ্ঞ করে তোলে, এমন বিশ্বাস থেকে এ সৃজন প্রচেষ্টা। আমাদের এ সমাজ মাঝে মাঝে হৃদয়হীনের মত কারো কারো জীবনে তিক্ততার ইতিহাস রচনা করে। এই তিক্ততার ইতিহাস সভ্য সমাজের অনেকের কাছে হয়তো-বা অবিশ্বাস্য। এ সকল বাস্তব সত্যের সঙ্গে শিল্প-সত্য মিলিয়ে একজন লেখকের সংবেদনশীলতার নির্যাস দক্ষ হাতের কারুকাজে অসাধারণ এক কাহিনি হয়ে ওঠে। যে চাঁদ সমুদ্রে জোয়ার জাগায়, সেই চাঁদ যেমন তার ক্ষমতা সম্পর্কে কোনদিন জানতেও পারে না, তেমনি যে নারীর প্রেরণায় বিশ্বসভ্যতা আজ বিকশিত, সে নারী প্রায়শই প্রেরণায় তার প্রাপ্য মর্যাদা পায় না। প্রদীপশিখা অন্ধকারকে বিদীর্ণ করে চার দিক আলোকিত করলেও তার ঠিক নিচে থাকা অন্ধকারকে বিলীন করতে পারে না। তেমনি আমাদের নারী সমাজ তার কাছের মানুষকে সুখী করতে গিয়ে তার একান্ত নারী সত্তার প্রতি অবিচার ও চিরদুঃখের ইতিহাস রচনা করে। আবহমান বাংলার নারী জীবনের চিত্রকল্প বাহ্যিক দৃষ্টিতে অনেক ঐশ্বর্য্যম-িত দেখালেও তার আপন সত্তায় বিচরণ করে রক্তিম রিক্ততা। জীবনের কোনো এক অংশের অপ্রাপ্তি পুরো জীবনকে কীভাবে নিঃস্ব করে দেয় তারই একটি প্রতিচ্ছবি হলো- বেদনার নীল আকাশ।
শাহনাজ বেগম জন্মগ্রহণ করেন ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র সংসদ ভবনের অদূরবর্তী লালমাটিয়া এলাকায়। তাঁর পিতা ডাঃ মোহাঃ তাহির বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। মেডিসিন বিভাগে বাংলাদেশর খ্যাতিমান একজন সফল অধ্যাপক। তাঁর মাতা ফাতেমা বেগম একজন গৃহিণী। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে শাহনাজ বেগম সর্বকনিষ্ঠ। এই মেধাবী ছাত্রী ও মননশীল লেখক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ থেকে। অতঃপর ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে। এরপর আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেন। তাঁর লেখার বৈশিষ্ট্য এই যে, চারপাশে যা দেখেন তার মধ্য থেকেই গল্পের রসদ সংগ্রহ করেন। এই কারণে তাঁর গল্পের স্বাদ ভিন্ন, গল্প অপূর্ব এবং পরিবেশায় মমতার ছাপ বিদ্যমান।