মহিমান্বিত রমাদান। বান্দার প্রতি আল্লাহর অপার দান। বছরের দীঘল প্রহর ঘুরে রহমত, মাগফিরাত ও শান্তির বারতা নিয়ে কড়া নাড়ে মুমিনের দুয়ারে। শীতের পত্র-পল্লবহীন গাছ যেমন বসন্তে শোভিত হয় সবুজের সমারোহে, তেমনি রমাদানের প্রতিটি মুহূর্ত সুসজ্জিত হয়ে ওঠে সাওয়াবের ফুলে-ফলে। প্রত্যেকটি পুণ্যময় কাজের জন্য ঘোষিত হয় লোভনীয় অফার। সেই অফারের পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় শত, হাজার, লক্ষ্- কোটির সীমানা। পরিশেষে আমলের প্রতিদান সম্বন্ধে রবের পক্ষ থেকে ঘোষিত হয় উদাত্ত আহ্বান, ' রোযা আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দিব।' রমাদান আমলের মাস। সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এই মাসকে আমলের মাধ্যমে অর্থবহ করে তুলতে সঠিক গাইডলাইনের বিকল্প নেই। আরব- আজমের খ্যাতনামা শায়েখদের রমাদান সংক্রান্ত শতোর্ধ্ব প্রবন্ধ থেকে বাছাইকৃত অতি গুরুত্বপূর্ণ বিশটি প্রবন্ধের সংকলন, ' মুমিনের জীবনে রমাদান।' প্রতিটি প্রবন্ধে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। রমাদানের প্রস্তুতি পর্ব থেকে শেষ অবধি করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়াবলী উপস্থাপিত হয়েছে চমৎকার ব্যঞ্জনায়। হাসানাহ পাবলিকেশনের নতুন আয়োজন আপনাকে করে তুলবে অন্যরকম রমাদানের সারথী।
Title
মুমিনের জীবনে রমাদান (স্কাই ব্লু কালার কভার) - স্কাই ব্লু
বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ., সংক্ষেপে ইমাম গাজ্জালী ছিলেন একজন সুফিসাধক ও মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ, যিনি তাঁর দর্শন ও চিন্তাধারা বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর পারিবারিক ব্যবসা সুতা সংক্রান্ত হওয়ায়, সেখান থেকে তার নাম গাজ্জালী হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যেহেতু 'গাজ্জাল' শব্দের অর্থ সুতা। ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দে (হিজরি ৪৫০ সাল) ইমাম গাজ্জালী ইরানের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং এই তুস নগরীতেই তার শৈশবকাল ও শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি ইসলামের স্বর্ণযুগে জন্ম নেন, যে যুগে শিক্ষা, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে মুসলমানরা অনেক এগিয়ে গিয়েছিলো। একইসাথে বিস্তার লাভ করেছিলো পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনেরও। ইমাম গাজ্জালী এসকল বিষয়েই দীক্ষা লাভ করেন এবং বিশেষ করে ঐ যুগের বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ আলেম ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনির কাছ থেকে ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। মুসলিম দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, ফিকহশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী । জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থস্থান বাগদাদের সেরা বিদ্যাপীঠ নিযামিয়া মাদ্রাসায় তিনি অধ্যাপনা করেন। তিনি তৎকালীন বাদশাহর দরবারেও আসন লাভ করেন। তবে সুফিবাদ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়ে তীব্র আকর্ষণ থাকায় তিনি জ্ঞান আহরণের জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন ও নানা বিষয় সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান অর্জন করেন। ইমাম গাজ্জালী রহ. বই রচনার মাধ্যমে তাঁর অর্জিত এসকল জ্ঞান মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমূহ-তে তিনি আলোচনা করেছেন সুফিবাদ, ইসলামি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে, এবং তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চার শতাধিক। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'আসমাউল হুসনা', 'মিশকাতুল আনোয়ার', 'ফাতাওয়া', 'মিআর আল ইলম', 'হাকিকাতুর রুহু', 'দাকায়েকুল আখবার' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১১১১ খ্রিস্টাব্দে (৫০৫ হিজরি) তিনি নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে মৃত্যবরণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় একজন মনীষী।