লেখক পরিচিতি লেখক, কবি, সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তাঁর একমাত্র পেশা এবং উপন্যাস রচনায়ও মনোনিবেশ করেছেন।
ফ্ল্যাপে লিখা কথা এই হল ইতিহাসের সেই পট-পরিবর্তনের কাহিনী, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার ভেতর দিয়ে যার সূচনা ঘটেছিল রাউতনগরে। শুরু হয়েছিল হত্যার রাজনীতি। তারপর রাউতনগরের ইতিহাসকে ক্রমান্বয়ে কলঙ্কিত করে লাফিতুর রহমান, লাইলা বেগম ও খোয়াজ আবদুল্লাহ মুরতাদ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কল্যাণে দেশবাসী জানে শেখ মুজিবকে হত্যা পর থেকে দুই অবৈধ দল তিনজন মানুষের নেতৃত্বে রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে চুরি, প্রতারণা, জালিয়াতি, হত্যা, ব্যভিচার, লুণ্ঠন ও সন্ত্রাসের রাজন্য সৃষ্টি করেছিল। দুর্দশাগ্রস্ত করে তুলেছিল জানিকে। রাউতনগরের মানুষ কি জানে এরা প্রকৃতঅর্থেই কারা? কেমন ছিল তাদের কর্মকাণ্ড? কী ছিল তাদের আকাঙ্ক্ষা? কোন কোন উত্থানকে তারা নেতৃত্ব দিয়েছিল পতনের পরিণতি সম্পর্কে না-জেনেই?
আসুন, আমরা প্রবেশ করি বাস্তব ও অবাস্তবতার মিশ্রণে গড়ে তোলা মোস্তফা মীরের সেই বিস্ময়কর জগতে, যেখানে তার তীক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার সেই প্রতিধ্বনি শুনতে পাব, যা প্রান্তসীমা স্পর্শ করার আগেই এক হৃদয় থেকে অন্য হৃদয়ে পৌঁছে যায়।
মােস্তফা মীর মূলত কবি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যারা প্রথম কবিতা লিখতে শুরু করেন এবং সত্তর দশকে বাংলা কবিতাকে যারা এদেশে জনপ্রিয় করে তােলেন মােস্তফা মীর তাদের অন্যতম। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালে, রাজবাড়ী জেলার বড়লক্ষীপুর গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তিনি মাষ্টার্স করেছেন ১৯৭৬ সালে। কর্মজীবনে একাধিকবার পেশা বদল করেছেন এবং একটি বেসরকারি সংস্থায় ১৮ বছর যুক্ত ছিলেন সম্পাদনা কর্মের সঙ্গে। আজন্ম উদাসীন ও প্রচার বিমুখ এই কবির কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা মাত্র পাঁচটি। পুরো আশির দশকে তিনি কোন লেখালিখিই করেননি। নব্বই দশকের শুরুতে এসে হঠাৎ করেই লেখেন উপন্যাস 'দানববংশ।' মৌলবাদীরা মামলা ঠুকলেও তা ধােপে টেকেনি। তবে গদ্যচর্চার এই ধারাবাহিকতায় লেখেন আরও তিনটি উপন্যাস, ‘ঈশ্বরের ঘ্রান’, ‘কুকুরকুঞ্জ’ এবং তােমাকে চাই'। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই তিনি উপন্যাস রচনার পাশাপাশি অনুবাদ কর্মে হাত দেন এবং গদ্য ও পদ্য মিলে তাঁর অনুবাদ গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ এর অধিক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তার একমাত্র পেশা এবং তিনি উপন্যাস রচনায়ও মনােনিবেশ করেছেন । তবে প্রায় সময়ই তিনি অসুস্থ থাকেন। কারণ গত এগার বছর যাবৎ তিনি লিভারের অসুখে ভুগছেন। গত বছর প্রকাশিত হয়েছে তার গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘মিশরীয় পুরাণ'। মােস্তফা মীরের সবচেয়ে আলােচিত গ্রন্থ হচ্ছে ‘আদম ইতিহাসের প্রথম চরিত্র।