জলরঙে আঁকা ছবি নাকি প্রধানত দু’ধরণের। স্বচ্ছ আর অস্বচ্ছ। আমি বলি, না। ছবি কখনও অস্বচ্ছ হতে পারে না। বাঁকগুলো হয়ত অস্বচ্ছ মাধ্যমের সাহায্যে মূলবিন্দুতে পৌঁছোয়। তবে উদ্দেশ্য একটাই। যারা ছবি দেখছে, তাদের জন্য একটি স্বচ্ছ, স্পষ্ট অর্থ তৈরি করা। এই বইটিকে পাঠকেরা কীভাবে নেবেন? কিছু চরিত্রের সম্মিলন ঘটিয়েছি। জীবনের বাঁকে বাঁকে তাদের দৃশ্যপট আঁকার চেষ্টা করেছি। কারও জীবন হয়েছে জলের মতোই টলটলে, স্বচ্ছ। কারও জীবন অশান্ত আবহাওয়ায় সমুদ্রের জলের মতো উত্তাল, প্রলয়ঙ্করী। সময়কাল? উপন্যাসটিকে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বললে ভুল করবেন। মুক্তিযুদ্ধনির্ভর উপন্যাস এটি নয়। তবে আমাদের মহান যুদ্ধে কিছু মানুষের জীবন আর দিনযাপন কেমন ছিল, তার একটি ছবি আঁকার চেষ্টা করেছি আমার ঠাসবুনোনি লেখার ক্যানভাসে। এদের মাঝে কেউ কেউ আমার জীবনের সাথে জড়িত, কাউকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। জলরঙকে কেউ যদি মেমোয়ার হিসেবেও দাবি করেন, তাতে আপত্তি করব না। যুদ্ধের খণ্ড খণ্ড ছবি আছে, প্রেম-ভালোবাসা আছে, বিচ্ছেদ আছে, মিলন আছে, বিষাদমাখা আখ্যান আর আছে মন ভালো করে দেবার মতো কিছু মুহূর্ত। ক্যানভাসে জলরঙে আঁকা ছবি শেষ করলাম। ছবিটা কেমন হলো, তা বিচার করার দায়িত্ব পাঠকের ওপর ন্যস্ত করে দিলাম...
জন্মস্থান পুরাতন ঢাকার নারিন্দায়, মাতুলালয়ে। এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। আদী প্রকাশন, পরিবার, ব্যবসা আর নানা ঝক্কির মাঝেও নিজের লেখকসত্ত্বাকে কখনও তিনি বিলীন হতে দেননি। সময় পেলেই বসে গিয়েছেন কী-বোর্ডের সামনে। অনুবাদ করেছেন, লিখেছেন ছোটগল্প। ব্ল্যাক নামে একটি সমকালীন মৌলিক গল্প সংকলন এসেছে তার হাত ধরে। অবসরে দেশে-বিদেশে ঘুরতেও বেশ পছন্দ করেন। নিজের ঔপন্যাসিক সত্ত্বাকে এবারের বইমেলায় তিনি পাঠকদের সামনে এনেছেন। প্রকাশিত হলো তার প্রথম উপন্যাস “জলরঙ”। জলরঙের রঙিন ক্যানভাসে পাঠকদের স্বাগতম!