যেকোনো সৃষ্টির একমাত্র লক্ষ্যই থাকে ধ্বংস হওয়া। মানুষও আজন্ম পথ চলে একটা সফল, সুন্দর আর অর্থবহ মৃত্যুর উদ্দেশ্যে। একটা জীবনের আর সবকিছু মিথ্যা হতে পারে, সব ধরনের স্বপ্ন অবাস্তব হতে পারে, যে কোনো সম্ভাবনা অলীক হতে পারে। কিন্তু প্রতিটি জন্মের সাথে জুড়ে দেওয়া একমাত্র সত্য মৃত্যুর হিমশীতলতা কেউ অস্বীকার করতে পারেনা। একজন মানুষের জীবনযাপনের উদ্দেশ্যই থাকে যে, এই মৃত্যুমুখে শেষযাত্রাটা কতটা সফল হবে। কোনো মৃত্যু একজন মানুষকে মহিমান্বিত করে, কোনো মৃত্যু করে ঘুণিত, কোনো মৃত্যু বাকী মানব জাতিকে করে দেয় বাকরূদ্ধ, কোনও মৃত্যুতে মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেলে। আবার সহজ স্বাভাবিক মৃত্যুও কখনো কখনো মানুষকে ভাবায়। এধরণেরই পাঁচটি মৃত্যুর অভিমুখে জীবন নিয়ে যাত্রার বর্ণনা দিয়েছেন মিম্ মি রহমান তার শেষ যাত্রা গল্প সংকলনটিতে। এটি মিম্ মি’র পঞ্চম একক গল্পসংকলন, যেখানে ছয়টি গল্পের ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকের বর্ণনা পাঠককে ভাবনার খোরাক জোগাবে। মিম্ মি ইতোমধ্যে সাইকোলজিক্যাল গল্প লিখে ব্যাপক পাঠকনন্দিত। ব্যক্তিজীবনে কঠিন আর অসহনীয় অভিজ্ঞতার পথ পাড়ি দিয়ে সফলতায় দাঁড়ানো একজন নারী বুদ্ধিমত্তা, চিন্তাশীলতা ও বাস্তবজ্ঞানে সম্মৃদ্ধ হবে, এটাই পরম স্বাভাবিক। আর মিম্ মি’র লেখায় সবসময় এই পরিমিতিবোধ আর পরিনতবোদ্ধার পরিচয় পাওয়া যায়। ফ্ল্যাপ লিখতে গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েও আমার পাঠক মন একটু অন্যরকম ভাবনায় আক্রান্ত হয়েছে, তৃপ্ত হয়েছে। আমার ঐকান্তিক শুভকামনা, বইটি প্রকৃত পাঠকদের সমাদর অবশ্যই পাবে। ফৌজিয়া খান তামান্না লেখক
জন্ম ... ২৩ জুন। ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলির পৈতৃক বসতভিটাতে বর্ষাসড়বাত ভোরে। পিতা- মো. আতিয়ার রহমান। ব্যবসায়ী এবং সমাজসেবক। মাতা- নূরুন নাহার রহমান। গৃহিণী। পাঁচ বোন। লেখিকা তার পিতা-মাতার বড় সন্তান। একমাত্র সন্তান আহ্নাফকে নিয়ে তার একান্ত নিজস্ব ছোট্ট সংসারজীবন। লেখিকা পেশায় একজন চিকিৎসক। স্কুল-কলেজজীবন ফরিদপুরে কাটিয়েছেন। পরবর্তীকালে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে চলে আসেন ময়মনসিংহ। কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস কোর্স শেষ করে বারডেম থেকে সিসিডি এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত। লেখালেখির শুরু স্কুলজীবন থেকেই। স্কুল, কলেজের ম্যাগাজিন, দেয়াল পত্রিকা এবং বিভিনড়ব দৈনিক পত্রিকার শিশু, সাহিত্য এবং নারী পাতায় লিখতেন। মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর লেখালেখিতে একটা বড় গ্যাপ তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিনড়ব অনলাইন পোর্টাল এবং ফেসবুকের বিভিনড়ব লেখালেখির গ্রুপে আবার নিয়মিত লিখতে শুরু করেন। ২০১৮-এ অমর একুশে বইমেলাতে লেখিকার প্র ম একক বই ‘আনটোল্ড স্টোরি ফ্রম এ স্ট্রাগলার’ প্রকাশিত হয় শব্দভূমি প্রকাশনী থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯-এ আসে গল্প সম্ভার ‘অপ্রত্যাশিত তুমি আমি’ বইটি। এছাড়া আরো বেশকিছু যৌথ বইতেও লেখিকার লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছে। লেখিকা মূলত সমাজের বিভিনড়ব অসামঞ্জস্য এবং যুগ যুগ ধরে চলে আসা গৎবাঁধা তবে অযৌক্তিক ইস্যুগুলো তুলে আনেন লেখার ভেতর দিয়ে। তার লেখার উল্লেখযোগ্য দুটো বিষয় হচ্ছে পজিটিভ ভাইব এবং সাহসিকতা। নারী-পুরুষ ভেদাভেদ না করে লেখার চরিত্রগুলোকে মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টাও লক্ষণীয় তার লেখাতে। পেশায় চিকিৎসক হওয়ায় সমাজের বিভিনড়ব শ্রেণির মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখার, জানার সুযোগ পান লেখিকা। যা তার লেখালেখির ভাণ্ডারকে দিনে দিনে আরো সম"দ্ধশালী করে তুলবে বলে আশাবাদী।