বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া সে দিনটা ছিল ভয়াবহ বৃষ্টি-বাদলার। এ অঞ্চলের মানুষ দু'চার দশ বছরেও এত বৃষ্টি দেখেনি। দিন পার হয়ে রাত নেমে এসেছে, বৃষ্টি থামার কোন সংকেত নেই, যেন বল বৃদ্ধি করে পূনরায় ঝাপিয়ে পড়েছে সবাই। এই বৃষ্টির রাতেও গর্ভবতী স্ত্রী ফুলকলিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে ইচ্ছা করে না মঈনের, তার মাথার ভেতর লোভের পোকা কিলবিল করে। সে নেমে যায় সুরঙ্গ অথবা পাতাললোকে। তার হাতে সময় অত্যন্ত কম, তাকে খুঁড়ে খুঁড়ে পৌছে যেতে হবে গুপ্তধনের কাছে। উদভ্রান্ত হয়ে মাটির দেয়াল খুঁড়তে থাকে সে। একটা কেঁচোর মতো ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে সেই গর্তে এসে নামে ফুলকলি। বাইরে বৃষ্টির সাথে এবার যুক্ত হয়েছে প্রবল ঝড়, যেন কেয়ামত নেমে এসেছে পৃথিবীর বুকে। এমনি সময় সেই সাপের মতো সুরঙ্গে ফুলকলির গর্ভ যন্ত্রণা আরম্ভ হয়। মাতৃজঠর থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে নতুন একটা মানবশিশু। একজন ডাক্তার অথবা দাই খোঁজার জন্য ঝড় জল উপেক্ষা করে সারা দুনিয়াটা চষে বেড়ায় মঈন। কোথাও কেউ যেন মঈনের জন্য অপেক্ষা করে নেই। মঈনের দিশাহীন লাগে, কোনো দৈব কি ঘটবে না তার জীবনে? তাদের একমাত্র সন্তান যামিনী কি দেখবে না আলোর মুখ? সুড়ঙ্গ, গুপ্তধন, লোভ আর মাতৃজঠরে থাকা মানবশিশুর অস্তিত্ব ইত্যকার প্যাঁচ-ঘোচের গল্প হলো যামিনী। পড়তে আরম্ভ করলে থামা মুশকিল!!!