"শারঈ মানদণ্ডে মুনাজাত ও দু‘আ" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ প্রচলিত মুনাজাত সম্পর্কে লেখা-লেখি করার ইচ্ছা মােটেও ছিল না। কিন্তু এই অতি তুচ্ছ বিষয়টি ইসলামী সমাজ সংস্কারের পথে পাহাড়সম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ শিরক-বিদআত সহ এর চেয়ে আরাে মারাত্মক অপরাধ সমূহের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই প্রথা। একশ্রেণীর আলেমও এর পক্ষে জোরপূর্বক প্রচারণা চালান। অথচ মুনাজাত ক এর দু'আ কী, কখন করতে হবে, কোথায় করতে হবে এবং কোন পদ্ধতিতে করতে হবে, সে সম্পর্কে তাদের স্বচ্ছ ধারণা নেই। তাদের কাছে তেমন কোন কিতাবপত্রও নেই। কোন গােষ্ঠী আবার এটাকে জিয়ে রেখে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে। ফলে ছহীহ দাওআত ব্যাহত হচ্ছে, সরলপ্রাণ মুসলিম জনতা প্রতারিত হচ্ছে। তাই দু’টি কথা লিখতে বাধ্য হয়েছি। এ সম্পর্কির বিভিন্ন আলােচনা-সমালােচনা, সম্মেলন-সমাবেশ ও বাহাছ-মুনাযারায় অংশগ্রহন করে যে সমস্ত বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে, তা নিয়েই এই লেখনী। লেখাটি মােট আটটি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথম অধ্যায়ে প্রকৃত মুনাজাত বলতে কী বুঝায়, ছালাতের সাথে এর সম্পর্ক কী এবং ছালাতের মধ্যে কোন্ কোন্ স্থানে মুনাজাত করতে হয়, তা আলােচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে ফরয ছালাতের পর পঠিতব্য যিকির ও সাধারণ দুআ সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে প্রচলিত মুনাজাতের পক্ষে পেশকৃত দলীলগুলাের তাহক্বীকৃ বা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ে প্রচলিত মুনাজাত সম্পর্কে বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিতগণের মন্তব্য পেশ করা হয়েছে। পঞ্চম অধ্যায়ে জানাযার ছালাতের পর, ঈদায়েনের পর, বিবাহ অনুষ্ঠান, সভা-সম্মেলন ও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর দু'আ করা সম্পর্কে আলােচনা করা হয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে প্রচলিত মুনাজাতের পক্ষে রচিত কয়েকটি পুস্তকের পর্যালােনা করা হয়েছে এবং সামাজিক কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। সপ্তম অধ্যায়ে দুআ করার ছহীহ পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে এবং অষ্টম অধ্যায়ে একান্ত প্রয়ােজনীয় অনেকগুলাে দু’আ সংযােজন করা হয়েছে।
মোজাফফর বিন মহসিন ১৯৮৫ সালের ১ জানুয়ারি রাজশাহী জেলার বাঘা থানার হেদাতিপাড়ার বাওশা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ২০০০ সালে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে দাখিল, ২০০৩ সালে আলিম ও ২০০৭ সালে ফাজিল পাস করেন। আরবি শিক্ষার পাশাপাশি তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে বি.এ (সম্মান) এবং ২০০৮ সালে এম.এ পাশ করেন। এছাড়াও তিনি আলাদিপুর সালাফিয়া মাদ্রাসা থেকে ২০০১ সালে দাওরা হাদিথ পাশ করেন। মুযাফফর বিন মুহসিন হাদিস শিক্ষক হিসেবে ‘আল-মারকাজুল ইসলামিয়াস সালাফি’তে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি পিস টিভির আলোচক, বাংলাদেশ আহলে হাদীছ যুবসংঘের সদ্য সাবেক সভাপতি, এবং হাফাবা দারুল ইফতার সদস্য। তিনি এ পর্যন্ত জাল হাদিস বর্জনের মূলনীতি, তারাবীহর রাকাত সংখ্যা, ঈদের তকদির, ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা, ফাযায়েলে আমল, আমলে ছালেহ, প্রশ্নোত্তরে আরকানুল ইসলাম বই রচনা করেছেন।