যে সব প্রবন্ধের লিখনপর্ব প্রভূত আনন্দে সম্পন্ন হয়েছিল সেগুলাের গ্রন্থবদ্ধ রূপকেই প্রিয় প্রবন্ধ নামকরণ করেছেন প্রাবন্ধিক। কালানুক্রমিকভাবে বিন্যস্ত গ্রন্থিত ছাব্বিশটি প্রবন্ধে লেখকের বিগত পঁয়ত্রিশ বছরের মননচর্চা ও গদ্যশৈলীর বিকাশক্রম পরিস্ফুট। কবিতা-গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ ও গানসহ সংকলিত প্রবন্ধাবলির বিষয়ে যুক্ত হয়েছে সাহিত্যের দু-জন প্রাতিস্বিক শিক্ষকের কথকতাও। সাহিত্যসমালােচকের মূল্যায়নধর্মী বিবেচনায় গ্রন্থভুক্ত অধিকাংশ প্রবন্ধে সুপরিচিত অথবা স্বল্প-পরিচিত সাহিত্যশিল্পীর রচনার অনালােকিত অথবা অকর্ষিত ভুবনে আলাে ফেলেছেন বর্তমান প্রাবন্ধিক। এর ফলে অধিকাংশ প্রবন্ধেই নতুনতর কিছু শক্তি, কিছু অনাবিষ্কৃত সত্য উন্মােচিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জগদীশ-বিভূতিভূষণতারাশঙ্কর-বুদ্ধদেব প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিকের নানাবিধ নান্দনিক জিজ্ঞাসা ও বিশ্লেষণধর্মী গদ্য সাহিত্যপ্রেমী পাঠক আর মূল্যায়নপ্রবণ সাহিত্য-গবেষকের মনে নতুনতর চিন্তা জাগিয়ে তুলবে, ভিন্ন আর-এক পাঠনির্মাণে উৎস ও উদ্দীপক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। মূল্যায়নধর্মী সাহিত্যবিবেচনা আকৃষ্ট করে যেসব পাঠককে, তাঁদের কাছে গ্রন্থটি সমাদৃত হবে নিঃসন্দেহে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধোত্তর প্রজন্মের বিশিষ্ট সাহিত্য-সমালোচক ভীষ্মদেব চৌধুরীর জন্ম সিলেট শহরে। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি উপাধি লাভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৮৪ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা। দীর্ঘ ঊনত্রিশ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে যুক্ত আছেন এই পেশায়। ২০০০ সনে তিনি বৃত হন প্রফেসর পদে। পাঠদান, সাহিত্য বিবেচনা ও গবেষণা তাঁর চিন্তা, আনন্দ ও উদ্যমের উৎস। বাংলা উপন্যাস, রবীন্দ্র ছোটগল্প এবং বাংলাদেশের সাহিত্য তাঁর অনুধ্যান ও মূল্যায়নের কেন্দ্রীয় বিষয়।