দীর্ঘ নির্জীবতার পর ইতোমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে মুসলিমবিশ্ব। সর্বত্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ইসলামি চেতনার নব জাগরণ। গৌরবময় অতীতের মিশেলে আধুনিকতার ছোঁয়ালাগা সমকালকে রূপায়ণের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে মুসলিম তরুণরা। ইসলামবিরোধী শক্তিগুলো যুগ যুগ ধরে মুসলিমবিশ্বে যেভাবে দখলদারিত্ব, নিপীড়ন-নির্যাতন ও বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন চালিয়ে এসেছে, তারই যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া এ মহাজাগরণ। তারা সমাজবিপ্লবের পথ বেছে নিচ্ছে, স্বপ্ন দেখছে নতুন এক পৃথিবী নির্মাণের। কিন্তু তাদের জানতে হবে সমাজবিপ্লবের বাস্তব রূপরেখা সম্পর্কে। ‘সমাজবিপ্লবের বোঝাপড়া’ বইটি সৌদি আরবের মজলুম লেখক ও স্কলার ড. সালমান আওদাহ রচিত একটি ঐতিহাসিক দলিল। এ বইতে বিপ্লবের পূর্বাপর সমাজের নানামুখী অবস্থা ও অবস্থানের প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেছন তিনি। সৌদি আরবের বেস্টসেলার এ বইটি ঘিরে নানা বিতর্কের মুখে পড়তে হয় লেখক সালমান আওদাহকে। দেশটিতে ‘সমাজবিপ্লবের বোঝাপড়া’ ব্যান করা হয়। তার কারাবন্দী জীবনের সঙ্গেও বইটি গভীরভাবে সম্পর্কিত। তবে বিশ্বব্যাপী এ বইটি পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের চিন্তার খোরাক জোগাতে হাজার হাজার কপি বই ফ্রিতে বিতরণ করে বিভিন্ন ইসলামি দল ও সংগঠন। মূল আরবি ‘আসইলাতুস সাওরাহ’ নামক এ বইয়ের প্রতিটি শব্দ বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষায় সদাজাগ্রত মুসলিম মননে শক্তি ও সাহস জোগাবে। নতুন একটি স্বপ্নীল সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন থেকে আমাদের কেউ ফিরিয়ে রাখতে পারবে না।
সালমান বিন ফাহদ বিন আব্দুল্লাহ আল আওদা (জন্ম: ১৪ ডিসেম্বর ১৯৫৬) আবু মু'আদ নামে পরিচিত। তিনি একজন সৌদি আলেম এবং মুসলিম স্কলার। তিনি ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্স’ এর একজন সদস্য এবং ইসলাম টুডে ওয়েবসাইটের আরবি সংস্করণের পরিচালক। বেশ কয়েকটি টেলিভিশন অনুষ্ঠান এবং পত্রিকায় কলামলেখক হিসেবেও কাজ করেন। সৌদি আরবের আল-কাসিমের বুরাইদা শহরের নিকটবর্তী আল-বাসর শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি তার শৈশব আল-বাসরে অতিবাহিত করেছেন, তারপরে বুরাইদাতে চলে আসেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে, একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আল-আউদার পুত্র হিশাম এবং তার স্ত্রী হায়া মৃত্যুবরণ করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি ইমাম মুহাম্মদ বিন সা'দ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক আইন শাসনে বিএ, এমএ এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং আবদুল আল-আজিজ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে বাজ, মুহাম্মদ ইবনে আল উসাইমিন, আবদুল্লাহ আবদাল রহমান জিবরিনের মতো পণ্ডিতদের কাছে থেকে শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে আল-কাসিমের বৈজ্ঞানিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষক হন। ১৯৯০ সালে বুরাইদার কেন্দ্রীয় মসজিদেও সাপ্তাহিক পাঠদান শুরু করেন। ইতিমধ্যে তিনি প্রায় ৫০টি বই রচনা করেন।