যখন আর একবার দায়িত্বটা পেয়ে গেলাম, আমি রাত্রিকে অবকাশ দিয়ে আর ঘুমোতে যাইনি। হিমালয় কিংবা ধ্রুপদির মতো জেগেছিলাম যেন সময়ের বিভীষণ চাহিদা এই স্রোতস্বিনীকে ছিনিয়ে না নেয়। জেগে ছিলাম, সম্পাদনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনেক রাত। শরীরের স্থাবর সব ক্লান্তি ঝেড়ে সম্পাদনায় ডুবসাঁতার দিয়েছি। মসৃণ কোনো পাথরের মতো পাণ্ডুলিপিকে চাপিয়ে রেখেছি বুকের ওপর। কর্মজীবী সব ইন্দ্রিয়কে নিয়োজিত রেখে বিমোহিত হয়েছি সুখের সন্তরণে। অনেক পরিশ্রমের পর সফল হলো হাবিবা লাবনী, গোলাম কিবরিয়া এবং আমার এই নিরন্তর প্রচেষ্টা। বারবার সময়ের বিভীষণ চাহিদা গোগ্রাসে এই অগ্রগতিকে খেয়ে নিতে চেয়েছে, আর তখনই আমি নিজেকে বিছিয়ে দিয়েছি শিশিরের শীতল স্পর্শে। সস্তা সম্পাদনার নামে যখন চলছে গোঁজামিল ব্যস্ততা, মৃগতৃষ্ণার অপুষ্টিতে ভুগছে কবিতার সুখ! বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতো গিলে খাচ্ছে সাহিত্য সম্ভার। আমরা তখন অন্যভাবে এগিয়েছি। নবীন এবং প্রবীণ কবিদের বাছাই করা কবিতার সমন্বয়ে আমাদের এই ‘স্বরাজের ছেঁড়াতার’। এই কাব্যগ্রন্থ পাঠক হৃদয়ে প্রশান্তির সুঘ্রাণ বয়ে আনুক। একদিন ছারখার হতে হতে কবিতা পাড়া আবার নেশামুক্ত হবে পুড়ে গিয়ে অন্তর্নিহিত খরায়। আমরা রেখে গেলাম সুপ্রশস্ত পথের দিশা। জ্যোৎস্নার ঘাটে উড়ুক্কু সময়ের হিজল তলায় কবিতার সুদিন ফিরে আসুক। শিশিরের মৃতদেহে বুনো আঁধারের রাজত্ব মুছে যাক। ভালো কিছু পাওয়ার আনন্দে সময়ের কসমিক স্থবিরতা ভুলে যাবেন একদিন... রেজা হাফিজ