ফাইলিবাস হলাে মূলত ভােগসুখ সম্পর্কিত একটি সংলাপ; কিন্তু তারও অধিক এতে প্লেটো যে প্রশ্নের সমাধান দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তা হলাে ভােগসুখই জীবনের একমাত্র আরাধ্য কি না, আর তা জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উপাদান কি না। সংলাপটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল এমন দুই বিপ্রতীপ প্রস্তাব থেকে : উপভােগ করা, আমােদিত ও আনন্দিত হওয়া এবং এসব কিছুর সঙ্গে যা সামঞ্জস্যপূর্ণ তা ভােগ করাই কি প্রাণীর জন্য উত্তম, না কি, জানা, অনুধাবন করা, স্মরণ করা এবং অন্য যা-কিছু তাদের অন্তর্ভুক্ত, তথা সঠিক অভিমত এবং সত্যিকার যুক্তিবােধ ভােগসুখের চাইতে উৎকৃষ্ট? আলােচনায় স্থির হয় যে, এককভাবে এদের কোনােটিই সুন্দর জীবনের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই এই দুয়ের মিশ্রণে যে জীবন, তা-ই উত্তম, তা-ই কাম্য। আলােচনায় জীবনের এসব উপাদানের কাম্যতার, শুদ্ধতার ও প্রয়ােজনীয়তার ক্রম নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাতে দেখা যায় যে, উত্তম জীবনের ক্ষেত্রে প্রথম যে জিনিসটি প্রয়ােজন, তা হলাে পরিমাপের সঙ্গে সম্পর্কিত, পরিমিতি, সময়ােচিত, আর অন্য সবকিছু-যা সদৃশ বলে বিবেচিত তার সঙ্গে সম্পর্কিত। দ্বিতীয়তে থাকবে তারা ‘যারা, সুন্দর, নিখুঁত ও স্বয়ম্ভর’; তৃতীয়তে থাকবে ‘যুক্তিবুদ্ধি ও বুদ্ধিমত্তা, আর চতুর্থতে থাকবে ‘বিজ্ঞান ও শিল্প, যাকে সঠিক অভিমত বলা হয়, তা। আর পঞ্চম স্থানে রয়েছে ‘আত্মার নিজস্ব বিশুদ্ধ ভােগসুখ। এই সংলাপটি আদতে কেবল ভােগসুখের প্রকৃতি নির্ণয় নিয়ে রচিত নয় বরং তা আরও বৃহত্তর বিষয়-উত্তম জীবন নিয়ে রচিত, তাই উত্তম জীবনের জন্য কী কী প্রয়ােজন তা-ই বর্ণনা করা হয়েছে এতে : তা হলাে উক্ত উপাদানসমূহের ‘মিশ্রিত জীবন।
১৯৫৩ সালের ১ লা অক্টোবর নরসিংদি জেলার বদরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে নীতি বিশ্লেষণে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০ সালে বাংলাদেশের সচিব পদ থেকে অবসর লাভ করেন (সর্বশেষ দায়িত্ব পালন-বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক, ম্যানিলা)। তাঁর আগ্রহের বিষয় বিজ্ঞানের দর্শন ও তুলনামূলক মিথলজি। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত পুস্তুক : প্লেটোর রিপাবলিক-এর ভূমিকা; রবীন্দ্রনাথ : কার্ল পপারের নির্বাচিত দার্শনিক রচনা; প্লেটোর আইনকানুন; রিপাবলিক, সিম্পেজিয়াম, রাষ্ট্রনায়কসহ প্লেটোর ১৭টি সংলাপের অনুবাদ এবং দর্শনের আরো কিছু ধ্রুপদী গ্রন্থ।