নানা সময় অনেক বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখার তাড়না কাজ করছে আমার ভিতর কিন্তু কোনো বিষয়েই গভীর বীক্ষা কাজ করে নাই। ফলে বেখবর রই গেছি জীবনের সবকিছুতেই। বিশেষ করি কবিতা, ভাষা, দর্শন, চিত্রকলা এ বিষয়গুলারে ঘিরিই বহুবছর আমার অগভীর উদ্দেশ্যহীন ঘুরাফিরা যা তেমন কোনো চৈতন্য আমাতে তৈয়ার করে নাই। কোনো বিষয়ে মত দেওয়ার মতো প্রজ্ঞা তৈয়ার হয় নাই এবে! এ ধরনের অনেক বাহুল্য লোকই আমাদের চারপাশে আছে। আমি সেই বাহুল্যজনেরই একজন। দেখা গেছে অহেতুক কিছু প্রশ্ন বিস্ময় অনুল্লেখ্য অনুভব সিরিয়াসের ভান ধরি আসছে কিন্তু কখনই সেসব বিষয়ে তলায়ে দেখার কোশেশ করি নাই। সেই ভানের বশবর্তী হই ভ্রান্তিমূলক অনেক অজ্ঞানসমুহ ভনিতারূপে এই বহিভুক্ত হইল অনুভব-বীজ নামে। গৌরচন্দ্রিকাতে স্বীকার করতেছি এইসব পাবলিক করার তেমন দরকারই ছিল না। নেহায়েতই লিখার ও সংরক্ষণের কুঅভ্যাসের কারণেই এই প্রচেষ্টার দায়ভার বৈভব প্রকাশনীর উপর চাপাইলাম। ভাষা নিয়া প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য চিন্তা-ধারার ভিতর অনেক ভেদ আছে, অনেক অভেদও আছে। তার কিছু কিছু তর্ক ভাষা-চিন্তা অংশে তোলা হইছে যা গভীর বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। এইখানে নুকতা আকারেই তা পেশ করা হইছে। বিশেষ করি এডওয়ার্ড সাঈদের টেক্সট নিয়া চিন্তাভাবনা কীভাবে পশ্চিমের দার্শনিকদের প্রশ্নবিদ্ধ করছেন, তাদের চিন্তা-ধারার গলদ ধরাই দিছেন। এ ছাড়া ভাব-ভাষা নিয়া আমাদের বাংলা অঞ্চলের বিশেষত দেহকেন্দ্রিক চিন্তারধারা নিয়া আলাপ পাড়া হইছে। এইসব লিখায় কোনো তথ্য ও জ্ঞান বাছবিচার ঐতিহাসিকতার আশ্রয়ে করা হয় নাই। ফলে তা মতামত হই উঠছে কইলে অতি উক্তি হইবে। আলাপ-সালাপ অংশে কবি জিললুর রহমান ও আমার মধ্যে কবিতা, ভাব-ভাষা বিষয়ে ফেইসবুক ইনবক্সে একসময় কিছু কথা চালাচালি হইছিল তা অন্তর্ভুক্ত করা হইছে। ফলে ঐ সময়ের আনাড়ি চিন্তার কিছু কিছু তাতে তোলা থাকল। হালের কবিতায় কথ্য ভাষা ব্যবহারের বিষয়ে বিতর্ক নিয়া ২০০৮ সালে সাপ্তাহিক ‘কাগজ’-এর তরফে একখানা মাসিক বৈঠকি অনুষ্ঠিত হয়। সেইখানে আমাদের কবি মহলের অনেকেই ছিলেন। তারা এ বিষয়ে স্ব স্ব বক্তব্য পেশ করেন। সর্বগণ্য কবি ফরিদ কবির আমারেও কিছু বলতে বলেন। আমি সভায় আমার অগোছালো আবাল টাইপের কিছু বক্তব্য প্রদান করি। শুধু আমার বক্তব্যের অংশটুকুই এইখানে রাখছি। এ লিখার সংকলনের জন্য আমার স্ত্রী ফারজানা সুলতানা সঞ্চিতাকে ধন্যবাদ দিতে চাই কারণ তার তাগাদাতেই এইসব লিখা গ্রন্থনা হইল। এ বহি প্রচারের জন্য যে আর্থিক ঝুঁকি লইলেন তার লাগি ধন্যবাদ দিই বৈভব স্বত্বাধিকারীগণকে। আমিন!
জহির হাসান। জন্ম ২১ নভেম্বর ১৯৬৯, যশোর জেলার পাইকদিয়া গ্রামে মাতুলালয়ে। শৈশব ও কৈশোর কাটছে যশোর ও ঝিনাইদহের গ্রামে। লেখালেখির শুরু ৭ম শ্রেণি। প্রথম কবিতা প্রকাশ ১৯৮৪ সালে যশোরের ‘দৈনিক স্ফূলিঙ্গ’ পত্রিকায়। আগ্রহ ধর্ম, ভাষা, দর্শন ও চিত্রকলায়। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন শাস্ত্রে।