ভূমিকা আজ যদি এই উপন্যাসকে ছাপা না হওয়া পাণ্ডুলিপি হিসেবে জমা দেয়া হয় তাহলে আমার বিশ্বাস, অন্তত আধা ডজন প্রকাশক এটি ছাপার জন্য লুফে নেবে। এক চমৎকার উপন্যাসের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে এ উপন্যাস পাঠককে কব্জা করে ফেলে। পুরো উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ পাঠককে মোহাবিষ্ট করে তাকে কাছে টেনে রাখে। এর বলিষ্ঠ এবং বিশ্বাসযোগ্য চরিত্রগুলোকে খুশবন্ত সিং দু’টি স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। প্রাত্যহিক জীবনাচারের ছাঁচে তাদের ঔদ্ধত্য, বীরত্ব অপার দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলে তিনি এক বিশাল আবহে ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের প্রচণ্ড ঘুর্ণিঝড় বইয়ে দেন তাদের জীবনের ওপর দিয়ে- যার সর্বপ্লাবী ঘটনাপ্রবাহ তাদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
এটি শুধু বলিষ্ঠ দক্ষতায় কারুকার্যময় এক কাহিনীই নয়, উপরন্তু সামাজিক দলিল হিসেবে এর রয়েছে মহামূল্যবান গুরুত্ব। বলিষ্ঠভাবে এটি চিত্রিত করে এক উত্তুঙ্গ আন্দোলনকে- যার ফলশ্রুতিতে পাকিস্তানের জন্ম। ইতিহাসবিদ, সমাজবিজ্ঞানী এবং সাধারণ নৃ-বিজ্ঞানীদের ছাত্রদের জন্য খুবই উঁচু মার্গের প্রাসঙ্গিক গ্রন্থ এটি। বিশেষ করে এ উপন্যাস এমনই একজনের হাতে রচিত, যিনি কিনা সেইসব পরিবারেরই সদস্য, যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে পুরুষানুক্রমে বাস করা বাস্তুভিটা থেকে; যাঁদের সেই ১৯৪৭ সালে প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশের নারকীয় বিভীষিকা।
এমন কি এ উপন্যাস রচিত হবার পঁচিশ বছর পরও, এই ১৯৮১ সালে কেউ এটি পড়লে কালের ব্যবধান তার এ কাহিনীর মুগ্ধতার আবেশকে বিন্দুমাত্র কমাতে পারবে না। অব্যাহতভাবে আজও এ উপন্যাস সকল শ্রেণীর পাঠককে মুগ্ধ করে। নিঃসন্দেহে এ গ্রন্থ এক উচ্চমার্গীয় সাহিত্যমূল্য ধারণ করে।
আর্থার লাল সাবেক ভঅরতীয় রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি।
জন্ম ফরিদপুর জেলার ডিক্রির চর গ্রামে, ২৯ এপ্রিল, ১৯৬১ সালে। ১৯৯৩ সালে। দৈনিক জনকণ্ঠে সাংবাদিক জীবনের সূচনা, যার ইতি ঘটে ২০১৪ সালে সাপ্তাহিক ২০০০-এর সহকারী সম্পাদক হিসেবে। এর আগে তার ২২টি বই প্রকাশিত হয়েছে- ফেরারী গাংচিল এবং বীণা : সঙ্গে চা (উপন্যাস), অর্চি এবং নীল তিমি (বিজ্ঞান কল্পকাহিনি), সাদা বাটের চাকু (শিশুতােষ), রােদের অন্ধকার (গল্পগ্রন্থ); অনুবাদ গ্রন্থ : লাইফ অব পাই (ইয়ান মার্টেল), ব্লাইন্ডনেস ( জোসে সারামাগাে), ওয়ার্ড নম্বর ৬ (আন্তন শেখভ), ট্রেন টু পাকিস্তান (খুশবন্ত সিং), দ্য কোম্পানি অব ওম্যান (খুশবন্ত সিং), দিল্লি (খুশবন্ত সিং), এ রয়্যাল ডিউটি (পল বারেল), তিনটি বিদেশি গল্প, ওয়াদারিং হাইটস (এমিলি ব্রন্টি); মার্ক টোয়েন : জার, রুশ বিপ্লব ও ম্যাক্সিম গাের্কি (বারবারা স্মিথ), শালিমার দ্য ক্লাউন (সালমান রুশদি), দ্য হােস্ট (স্টেফানি মেয়ার), দ্য গড অব স্মল থিংস (অরুন্ধতি রায়), দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমােস্ট হ্যাপিনেস (অরুন্ধতি রায়), দ্য দা। ভিঞ্চি কোড (ড্যান ব্রাউন); গবেষণা গ্রন্থ : একশত গ্রামীণ উদ্যোক্তার জীবনসংগ্রাম; একুশটি ব্যবসা : আপনার জন্য, দেশের জন্য।