সুরাইয়া বেগম একজন বিরলপ্রজ লেখক। সাহিত্য জগতে তার আবির্ভাব কিছুটা ঝড়ের মত। মেঘনা ও বঙ্গোপসাগর পাড়ে বেড়ে ওঠা সুরাইয়া শুরুতে কবিতা লিখলেও ইদানিং গদ্যের দিকে ঝুঁকেছেন। প্রথম গ্রন্থ কাব্যের। কিন্তু প্রচার বিমুখতার কারণে গ্রন্থটি পাদপ্রদীপের আলোয় আসেনি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে তার বেশ কিছু গল্প ও কবিতা। 'বলয়' তার প্রথম উপন্যাস। পাণ্ডুলিপিটি পাঠ করে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এর কাহিনী একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা থেকে নেয়া হয়েছে। গল্পের বিষয়বস্তু প্রেম। তবে এ প্রেমে ন্যাকামী নেই, আত্মপ্রবঞ্চনা নেই, দখলদারিত্ব নেই, বরং আছে বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো শত বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে, তথাকথিত ধর্মের আগল ভেঙে, সমাজের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে চারজন মানুষের প্রেমের প্রতি বিশ্বস্ততার এক মিলন বিরহের কথকতা। যেখানে বাধা আছে কিন্তু নেই স্থবির হয়ে থাকা। সকল সামাজিক বন্ধন ছিন্ন করে ভালোবাসার মানুষের প্রতি উদ্যম পক্ষপাতিত্ব, মনের গহিনে সযত্নে লালিত এক স্বপ্নময়ভুবন। লেখকের প্রকাশভঙ্গি, চিত্রময়তা, পরিবেশ বর্ণনা এবং চরিত্র চিত্রনে নির্মোহ, শিল্পীর মতো আপন বলয় থেকে এঁকে চলেছেন এক ভাবনার জগৎ, ভালোবাসার জগৎ, যা স্বাপ্নিক নয় বাস্তবতার অনন্য উদাহরণ। এই লেখকের প্রকাশভঙ্গি ও লেখার গতিময়তা, শব্দচয়ন তথা ঘটনার মালা গাঁথা থেকে প্রতীয়মান হয় তিনি অগ্রজ
সুরাইয়া বেগম এনডিসি (জ. ১৯৫৮) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএসএস অনার্স ও এমএসএস এবং ইংল্যান্ডের লীড্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'Health Management Planning and Policy' বিষয়ে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। তাঁর পেশাগত জীবন বহুমুখী অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। তিনি বিভিন্ন ক্যাপাসিটিতে স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, পররাষ্ট্র, শ্রম ও প্রবাসী কল্যাণ, স্থানীয় সরকার, অর্থ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি কলকাতাস্থ দূতাবাসের ১ম সচিব ও পর্যটন কর্পোরেশনের পরিচালক, সমবায় অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগ; বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি তথ্য কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন ও সেবামূলক সাংগঠনিক কাজে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী যিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (NDC) সম্পন্ন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন নেটওয়ার্ক (BCSWN)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার (গার্ল-ইন-স্কাউটিং) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্র ও দুই কন্যাসন্তানের জননী।