রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর (১৯৫৬-১৯৯১) উত্থান ও বিকাশ সত্তরের দশকের শুরুতে হলেও প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছেন এখনো। কাব্যভুবনে তাঁর সময়ের বেঁচে থেকেও যখন মৃতপ্রায়, তখন অকালপ্রয়াণ সত্ত্বেও রুদ্র জেগে আছেন, নিয়ত নবায়িত হচ্ছেন পাঠকের মনে। সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও নন্দিত কবি ছিলেন তিনি। আজ মৃত্যুর তিন দশক পরেও রুদ্রর কবিতা পঠিত হচ্ছে, প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা হচ্ছে, বিদ্যায়তনিক পঠন-পাঠনের আওতাভুক্ত হচ্ছেন। ক্রমশ উজ্জ¦ল হতে-থাকা রুদ্রর জীবন ও কবিতা নিয়ে প্রথম গবেষণা করেন তাঁর অনুজপ্রতিম ও ¯েœহধন্য কবি তপন বাগচী। বাংলা একাডেমি প্রকাশ করে তপন বাগচীর লেখা জীবনীগ্রন্থ। এরপর তিনি রচনা করেন আরেকটি গবেষণাগ্রন্থ। জীবনী ও গবেষণাগ্রন্থটিও নতুন এক গ্রন্থের রূপ নেয়। রুদ্র ও তাঁর কবিতা নিয়ে যাঁরাই গবেষণা করছেন, তাঁরাই দ্বারস্থ হচ্ছেন এই গ্রন্থের। কেউ কেউ স্বীকৃতি ছাড়াই ব্যবহার করেছেন তপন বাগচীর আবিষ্কৃত ও উদ্ধৃত তথ্য। তপন বাগচী রচিত সেই আকরগ্রন্থটি আজ নবকলেবরে উপস্থিত হলো পাঠকের দরবারে। রুদ্রচর্চায় অনন্য এই আদর্শ জীবনীগ্রন্থ পাঠকের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করবে, মননকে উসকে দেবে, আমাদের প্রত্যয় এমনই।
তপন বাগচী জন্ম: ২৩ অক্টোবর ১৯৬৮; কদমবাড়ি (মাতুলালয়) মাদারীপুর; পিতা তুষ্টচরণ বাগচী; মাতা জ্যোতির্ময়ী বাগচী। শিক্ষা: গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ও ফোকলাের বিষয়ে পিএইচডি । তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, যােগাযােগবিদ ও ফোকলােরবিদ।। উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ: বুকের ভেতর বসত করে (২০১৪)-সহ সাতটি কাব্যগ্রন্থ; ছন্দোবদ্ধ ভাবের পদ্য (২০১২)-সহ এগারােটি ছড়া ও কিশাের গল্পগ্রন্থ; সাহিত্যের এদিক সেদিক (২০১৩), রবীন্দ্রনাথ ও বৌদ্ধ আখ্যান (২০১২), লালন মতুয়া লােকসংগীত সন্ধান (২০১২), যাত্রাগান: জনমাধ্যম ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত (২০০৭), মুক্তিযুদ্ধে গােপালগঞ্জ (২০০৭), রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ: চন্দ্রাহত অভিমান (২০০২)-সহ একুশটি প্রবন্ধ গ্রন্থ; পুরস্কার ও স্বীকৃতি:: স্টান্ডার্ড চার্টার্ড দ্য ডেইলি স্টার সেলিব্রটিং লাইফ লিরিক এওয়ার্ড (গান, ২০১৪ ও ২০১৩), সাংস্কৃতিক খবর পদক (কবিতা, কলকাতা, ২০১৩), মহাকবি মাইকেল মধুসূদন পদক (প্রবন্ধ, ২০১২), অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতি পদক (লােকসংস্কৃতি, ২০০৮), জসীমউদ্দীন গবেষণা পুরস্কার (প্রবন্ধ, ১৯৯৬), মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার (প্রবন্ধ, ১৯৯১)-সহ আঠারােটি পুরস্কার ও স্বীকৃতি লাভ করেন। পেশা: উপপরিচালক, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ উপবিভাগ, বাংলা একাডেমি ।।