সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনৈতিক মহলের সকলে গুরু-শিষ্য হিসেবে জানেন। এমনও বলা হয় যে, বঙ্গবন্ধু ছিলেন সোহরাওয়ার্দীর মানসপুত্র। সোহরাওয়ার্দীর জীবিতাবস্থায় (মৃত্যু ১৯৬৩) বঙ্গবন্ধু তাঁর নির্দেশ শিরোধার্য করে চলেছেন। একমাত্র তাঁর মৃত্যুর পর তিনি তাঁর মতাদর্শ নিয়ে নড়েচড়ে দাঁড়ান। গবেষণায় দেখা যায়, এসব বক্তব্য সম্পূর্ণ সঠিক নয়। দুজনের মধ্যে মিল যেমন ছিল, অমিলও ছিল প্রচুর। আর সে অমিল হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গির, আদর্শের ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৌলিক প্রশ্নে। বঙ্গবন্ধু অনেক বিষয়ে তাঁর মতামত সোহরাওয়ার্দীর জীবদ্দশায়ই প্রকাশ করেছেন। বঙ্গবন্ধু অকুতোভয় ও স্পষ্টবাদী বলেই তা সম্ভব হয়। তবে এ কথা কিছুটা ঠিক যে, সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর বঙ্গবন্ধুর পক্ষে তাঁর নিজস্ব পূর্ণ ভাবনা-চিন্তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সহজতর হয়। কেননা, সোহরাওয়ার্দীকে বঙ্গবন্ধু পিতৃজ্ঞানে দেখতেন। অন্যদিকে, ভিন্নতা বা মতভেদ থাকার পরও মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী বঙ্গবন্ধুকে পুত্র স্নেহে আগলে রেখেছেন। উভয়ের মধ্যে মতভিন্নতা থাকার পরও তা কখনো বিরোধ বা বিচ্ছেদে রূপ নেয়নি। তাঁদের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্পর্ক খুবই অদ্ভুত ও ব্যতিক্রমধর্মী। মুখবন্ধ, ৫টি অধ্যায় ও উপসংহার নিয়ে গ্রন্থটি পরিকল্পিত। এটি পাঠে পাঠকবর্গ উত্থাপিত বিষয়সমূহ সম্বন্ধে পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পারবেন। আশা করা যায়, সোহরাওয়ার্দী বনাম বঙ্গবন্ধু গ্রন্থটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।