বিগত একশত বছরে পৃথিবীতে যে পরিমাণ বিজ্ঞানের আবিষ্কার হয়েছে, অতীতে কখনাে তা ঘটেনি। সব আবিষ্কারের বিবরণ লিপিবদ্ধ করা মানুষের সহজকর্ম নয়। কিছু আবিষ্কারের চরিত্র এমন যা পৃথিবীর চেহারাটাই বদলে দিয়েছে ভাবনার জগতে ঐসব আবিষ্কার প্রবল নাড়া দিয়েছে। এখন বিজ্ঞানের শাখা বহুধা। আবার নানা বিজ্ঞানের ভাবনা মিলে নুতন বিষয়ও যে বিজ্ঞানে তৈরী হচ্ছে না এমন নয়। নানা প্রযুক্তি ও প্রয়ােগ বিজ্ঞানভাবনার প্রকাশ ঘটছে। বিশ শতকের শুরুতে জার্মান বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্লাঙ্ক এমন কাজ করেছিলেন। যার সরণি বেয়ে আইনষ্টাইন ও বাের অত্যুচ্চমানের গবেষণা করেছেন। যার নাম আমরা এখন জানি কোয়ান্টাম ভাবনা। কোয়ান্টাম ভাবনা।অপরিহার্য মেনে নিয়েই লেসার আলাে এসেছে। লেসার প্রযুক্তি এসেছে। এসেছে অপরিবাহিতার ভাবনা। লেসার আর অপরিবাহিতা পৃথিবীর একগুচ্ছ প্রযুক্তি নির্মাণ করেছে। এই প্রযুক্তি এমন অপরিহার্য যে জীবনযাত্রার স্পন্দনে স্পষ্ট ছাপ ফেলেছে। এখন ঘরে ঘরে কম্পিউটার। ছােট্টদেও হাতে ছেলে ভােলানাে কম্পিউটার। বড়দের হাতে জটিল থেকে জটিলতম গবেষণার কম্পিউটার। মহাকাশ গবেষণা থেকে পরমাণু গবেষণা- কোথায় সে নেই ! কাজেই আমাদের আলােচনায় কম্পিউটার ইতিহাস সশরীরে হাজির। যতাে যাই বর্জন করা যাক, বর্জন করা যায় যাকে, সে ডি.এন.এ। দু'পাকে জড়ানাে ডি.এন.এ.। এই ডি.এন.এ. একুশ শতকের গবেষণায় মহার্ঘ মহারাজা। অথচ তার গঠন আবিষ্কারের কাহিনি অনেক নাটকীয় উপাদানে মােড়া। এই কাহিনি স্বভাবতই আলােচনায় জায়গা পেয়েছে। কোয়ান্টাম, লেসার, অতিপারিবাহিতা, কম্পিউটার, ডি.এন.এ, প্লাজমা প্রযুক্তি, রােবােটিক্স এবং ন্যানােপ্রযুক্তি এই আটটির আখ্যান নিয়েই রচিত এই অন্যরকম গ্রন্থটি। আশাকরি কিশাের ও ক্ষুদে জ্ঞান-বিজ্ঞান পিপাসু পাঠকদের ভালাে লাগবে। ঢাকা, জানুয়ারী ২০২১ইং সৌমেন সাহা
সৌমেন সাহা ১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কেটেছে এই জেলাতেই। খুলনার স্বনামধন্য সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও সরকারি সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি পি.সি. কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বিজ্ঞান , প্রযুক্তি ও গণিতের প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ ছিল শুরু থেকেই। সেই আগ্রহ থেকেই পাড়ি জমান সুদূর ইংল্যান্ডে। সেখানকার লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লন্ডন কলেজ অব বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এন্ড কম্পিউটিং বিভাগ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমাসহ বি.এস.সি. ডিগ্রি লাভ করেন। সৌমেন সাহা নিয়মিত বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, বিশেষত বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখি করেন। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, মাসিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় তাঁর প্রকাশিত লেখার সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। তাঁর পেশাগত জীবনেও তিনি বিজ্ঞান গবেষণার সাথে জড়িত। খুলনার ঐতিহ্যবাহী প্রাণিক বিজ্ঞানাগার খুলনার কেন্দ্রীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। জাতীয় বিভিন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রকল্পের উদ্ভাবনের কারণে তিনি পুরস্কৃতও হয়েছেন। পাঠক সমাদৃত সৌমেন সাহা এর বই সমূহ হলো ‘প্রাচীন ভারতীয় গণিত ও জ্যোতির্বিদ’, ‘বৈদিক গণিতের পরিচয়’, ‘পাগল করা গণিত’, ‘যন্ত্ররা যেভাবে কাজ করে’, ‘বিজ্ঞানের জানা অজানা কথা’, ‘জ্যোতির্বিজ্ঞানের সহজ পাঠ’, ‘মাথায় কত প্রশ্ন আসে’ ইত্যাদি। তাঁর লেখার মূল বিষয়বস্তু হলো বিজ্ঞান, গণিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান। সাধারণ পাঠকদের কথা মাথায় রেখে রচিত সৌমেন সাহা এর বই সমগ্র খুব সহজ ও সাবলীলভাবে এই জটিল বিষয়গুলো উপস্থাপন করে। বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখিতে আত্মমগ্ন এই লেখক বর্তমানে ঢাকার এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।