আধুনিক সাংবাদিকতা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে মোবাইল প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অবদান অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই। দুটি বিষয়েই বলা যায়, রাতারাতি সাংবাদিকদের দায়িত্ব-কর্তব্য পাল্টে দিয়েছে; পাশাপাশি গণমাধ্যম কীভাবে কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারের কাজটি করবে, তা-ও প্রভাবিত করছে। দ্রুত বর্ধনশীল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন টুলকে এখন যোগাযোগের উদীয়মান যুগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। আমরা এগিয়ে চলছি একমুখী গণযোগাযোগ কৌশল থেকে বহুসংখ্যক পাঠক-দর্শকের কাছে। এ জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেটওয়ার্ক। খবর জানতে অধিকাংশ পাঠক মোবাইল ডিভাইস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করছেন, যা কোথায় ও কীভাবে সাংবাদিক খচর প্রচার করবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে পাঠক নিজেই গণমাধ্যমকে সরাসরি বাধ্য করছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেরই আঞ্চলিক পত্রিকা থেকে শুরু করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর বাজার এখন অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মূলধারার গণমাধ্যমের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাওয়া, আয়ের পথ সংকুচিত হওয়া এবং পাঠক-দর্শক টানতে বিকল্প পথ খুঁজছে। অনলাইন, মোবাইল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সহজাত গল্প ব্যবহার কররে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীদের বিশ্বাস, আস্থা ও নতুন আয়ের সম্ভাবনা তৈরি করছে।
ড. কাবিল খান (জামিল) বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মোবাইল জার্নালিজম নিয়ে লেখা 'মোবাইল জার্নালিজম: সময়ের সাংবাদিকতা' বইটির লেখক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক এবং প্রথম আলোর ডিজিটাল বিভাগের মোবাইল জার্নালিজম বিশেষজ্ঞ ছিলেন। পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অব রাশিয়া থেকে সাংবাদিকতার উপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ২০১১ সালে সুইডেনের উপশালা ইউনিভার্সিটি এবং ২০১৩ সালে ইউনিভার্সিটি অব কোরিয়ায় ভিজিটিং প্রভাষক হিসেবে কাবিল খানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১৯ সালে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ‘মোজো এশিয়া’ শিরোনামে এশিয়ার প্রথম আন্তর্জাতিক মোবাইল জার্নালিজম কনফারেন্সের বক্তা ছিলেন ড. কাবিল। তিনি যুক্তরাজ্যের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ই-মডারেশন থেকে অনলাইন মডারেশনের একটি কোর্স পাস করেন। বিখ্যাত অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সেলিব্রেটিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। তার গবেষণার বিষয় মূলত নিউ মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন, সাংবাদিকতায় প্রযুক্তির প্রভাব, মোবাইল জার্নালিজম, কনভারজেন্স জার্নালিজম, মূলধারার সংবাদ মাধ্যমের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া ও নাগরিক সাংবাদিকতার প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা। মোবাইল জার্নালিজম শেখার অনলাইন প্লাটফর্ম ‘মোবাইল জার্নালিজম কমিউনিটি ইন বাংলাদেশ ’ এর প্রতিষ্ঠাতা কাবিল খান। এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদেরকে হাতে-কলমে মোবাইল সাংবাদিকতার ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি।