বিজ্ঞান বদলে দিয়েছে পৃথিবী। শুধুই পৃথিবী নয়, মানুষের জীবন-যাপনকে করে দিয়েছে অনেক সহজ, আনন্দঘন, উপভোগ্য। মানবকল্যাণে নিবেদিত হয়েছে বিজ্ঞান। কৃতী, মেধাবী, মানবদরদি বিজ্ঞানীরা সুকঠিন সাধনা, শ্রম ও অধ্যবসায়ে উৎসর্গ করে দিয়েছেন তাঁদের জীবন। বাধা-বিঘ্ন উজান প্রতিকূলতা, রক্তচক্ষু, শাসন-নির্যাতনও কম ছিল না এই অগ্রযাত্রায়। ধর্মান্ধতা, গোঁড়ামি, কুসংস্কার হটিয়ে আলোর উদ্ভাস নিশ্চিত করতে প্রাণপাতও করতে হয়েছে কোনো কোনো বিজ্ঞানীকে। তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা ও ঋণের শেষ নেই আমাদের। আলোকিত এইসব মানুষের জীবন ইতিহাস, তাঁদের সাধনা, সংগ্রাম ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে বিশদ জানা জরুরি। বিশেষত নবীন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সুন্দর, অর্থবহ করে তোলার জন্যে এই শিক্ষণ-পর্যবেক্ষণ-অনুধাবনের কোনো বিকল্প নেই। মহান বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত আবিষ্কৃত স্বর্ণফসলের সুফল ভোগ করছি আমরা। সে এক গর্বিত পরম্পরা। পাথর কেটে পথ তৈরি করেছেন যাঁরা, তাঁরা আমাদের শ্রদ্ধেয়, স্মরণীয় ও বরণীয়। তাঁদের নিষ্ঠা, একাগ্রতা, দৃঢ় মনোবল-আমাদের আদর্শ, অনুসরণীয় । এই গ্রন্থের বিষয় বিশ্বের ১২ জন অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর জীবন ও অবদান । সে সম্পর্কে আলোচনা। এই তালিকার বাইরেও যে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী নেই, এমন নয়। আরো অনেককেই অন্তর্ভুক্ত করা যেত। বইয়ের আকার-আয়তন ওতে বৃদ্ধি পেত। বইটি যাতে বিজ্ঞানপ্রেমী অনুসন্ধিৎসু পাঠকের ক্রয়সাধ্যের সীমায় থাকে সেই বিবেচনাও করতে হয়েছে। যাঁদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও যুগান্তকারী মহার্ঘ অবদান সম্পর্কে এই গ্রন্থে আলোকপাত করা হলো, তাঁদের প্রত্যেকেই স্বনামধন্য, প্রাতঃস্মরণীয়। এঁরা হলেন : আর্কিমিডিস, ইবনে সিনা, গ্যালিলিও গ্যালিলি, আইজ্যাক নিউটন, বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন, জেমস ওয়াট, চার্লস ডারউইন, লুই পাস্তুর, টমাস আলভা এডিসন, জগদীশচন্দ্র বসু, ম্যারি কুরি এবং আলবার্ট আইনস্টাইন । যাঁদের আমরা বৈজ্ঞানিক বা বিজ্ঞানী বলি, তাঁরা কীভাবে এমন এমন সব অদ্ভুত অদ্ভুত আবিষ্কার-উদ্ভাবন করতে পারলেন? তাঁদের জিজ্ঞাসা, কৌতূহল, আগ্রহ, অনলস শ্রমের উজ্জ্বল গর্বিত ইতিহাস আমাদেরকে অবশ্যই অনুপ্রাণিত উদ্বুদ্ধ করতে পারে । আমাদের নিজস্ব প্রয়োজন মেটানোর জন্যেই জানতে হবে তাঁদের জীবন বৃত্তান্তের খুঁটিনাটি। বর্তমানের মানবসভ্যতা গড়ে উঠেছে বহু বহু বছরের পথ পরিক্রমায়। বিজ্ঞানীরা মানুষের অনেক সমস্যার সমাধান করে গেছেন।
হাসান হাফিজের জন্ম নারায়ণগঞ্জের সােনারগাঁও উপজেলার এলাহি নগর গ্রামে, ১৫ অক্টোবর ১৯৫৫। যখন ছিলেন স্কুলছাত্র, প্রথম ছড়া ছাপা হয় ইত্তেফাকের কচি কাঁচার আসরে। পড়াশােনা করেছেন হােসেনপুর হাই স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য,গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতায় এম.এ.(ডাবল)। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত। দৈনিক বাংলায় সূচনা। আরাে কাজ করেছেন জনকণ্ঠ, কলকাতার সাপ্তাহিক দেশ (এখন পাক্ষিক), বৈশাখী টেলিভিশন এবং আমার দেশ-এ। এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থ ১৪০। সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে এই লেখক পেয়েছেন বহু সম্মাননা ও পুরস্কার। এর মধ্যে রয়েছে শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক, ডাকসু সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাঙ্ক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, কলকাতার সৌহাদ্য কবিতা উৎসব সম্মাননা, জাতীয় প্রেস ক্লাব লেখক সম্মাননা, ঢাকা রিপাের্টার্স ইউনিটি লেখক সম্মাননা, কবিতালাপ পুরস্কার, কবি জসীম উদ্দীন স্মৃতি পুরস্কার, এম নূরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, স্বপ্নকুঁড়ি পদক ইত্যাদি। হাসান হাফিজ বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের (এফইজেবি) সাধারণ সম্পাদক, বাংলা একাডেমির জীবন সদস্য। সাহিত্য-সাংবাদিকতা সূত্রে ভ্রমণ করেছেন বিশ্বের ১৫ দেশ। তার স্ত্রী শাহীন আখতার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক। এই দম্পতির একমাত্র সন্তান ডা. শিহান তাওসিফ গৌরব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত।