এ্যারিস্টটলকে সেন্ট টমাস একুইনাস বলতেন 'দার্শনিক', দান্তে বলতেন 'জ্ঞানীদের শিক্ষক'। আজ প্রায় আড়াই হাজার বছর পরেও চিন্তার ক্রমসম্প্রসারণশীল রাজ্যে এ্যারিস্টটলের মর্যাদার আসন বিপর্যস্ত হয় নি, এমন কি বিপদগ্রস্তও নয়। জ্ঞানীদের শিক্ষক তিনি এখনো, যদিও দার্শনিক না-বলে আজকের পরিভাষায় তাঁকে বৈজ্ঞানিক বলাই ভাল বলা হয়েছে যে, সক্রেটিস যদি মানুষকে দর্শন শিখিয়ে থাকেন, এ্যারিস্টটল শিখিয়েছেন বিজ্ঞান। পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের কোনো কৌশলই যখন জানা ছিল না, যান্ত্রিক উপকরণাদি যখন অনাবিষ্কৃত, সেইকালে অসামান্য কৌতূহল নিয়ে তিনি বস্তুকে বিচার করেছেন পরস্পর-বিশ্লিষ্ট করে; মানুষের অন্তর্লোক থেকে শুরু করে তাঁর চোেখ চলে গেছে আকাশের নক্ষত্রলোক পর্যন্ত। রাজনীতির বিশ্লেষণ যেমন করলেন তেমনি অনুসন্ধান করলেন নীতিশাস্ত্রের ভিত্তি ও প্রকৃতি। জীবদেহের সংগঠন যেমন নিরীক্ষণ করেছেন তেমনি পর্যালোচনা করেছেন শিল্পতত্ত্বের ও বক্তৃতা-বিজ্ঞানের। একদিকে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন তার্কিক অবরোহণ; অন্যদিকে বৈজ্ঞানিক অধিৱোহণ। তাঁর চরিত্রে বৈজ্ঞানিক কৌতূহলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল গ্রন্থপাঠে উৎসাহ। এ্যারিস্টটলই পৃথিবীর প্রথম বৈজ্ঞানিকএ্যারিস্টটলীয় ‘কাব্যতত্ত্বের আনুমানিক রচনাকাল খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০। অর্থাৎ এদেে ট্র্যাজেডি অভিনীত হওয়ার দু'শ বছর এবং ট্র্যাজেডির শেষ কালজয়ী লেখকের মৃত্যু সত্তর বছর পরে। ট্র্যাজেডির স্বর্ণযুগ ততদিনে শেষ হয়েছে। আর সেইজন্যে সময়টা ছিল “কাব্যতত্ত্ব' রচনার পক্ষে যথার্থ
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (জন্ম. ১৯৩৬) পেশায় সাহিত্যের অধ্যাপক এবং অঙ্গীকারে লেখক। এই দুই সত্তার ভেতর হয়তো একটা দ্বন্দ্বও রয়েছে, তবে সেটা অবৈরী, মোটেই বৈরী স্বভাবের নয়। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, অবসরগ্রহণের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রফেসর এমেরিটাস হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি শিক্ষা লাভ করেছেন রাজশাহী, কলকাতা, ঢাকা এবং ইংল্যান্ডের লীডস ও লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখার কাজের পাশাপাশি তিনি ‘নতুন দিগন্ত’ নামে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। তার গ্ৰন্থসংখ্যা আশির কাছাকাছি। তার অকালপ্রয়াত স্ত্রী ড. নাজমা জেসমিন চৌধুরীও লিখতেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।