একজন চিরায়ত বাঙালি নারী রেণু। তাঁর দৈনন্দিন জীবনচিত্রটা এরূপÑ রেণু ফুকনি দিয়ে আগুন জ্বেলে ঘর্মাক্ত হয়ে লাকড়ির চুলায় রান্না করছে, পরমুহূর্তে প্রিয় কোনো লেখকের বই পড়ছে। আবার সেই রেণুই কঠিন রাজনৈতিক সংকটে স্বামীকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে তার কাজকে সহজ করে দিচ্ছে, নিজহাতে শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করছে, সন্তানদের সঠিকভাবে দেখাশুনা করছে, গরীব আত্মীয়দের খোঁজখবর নিচ্ছে, স্বামীর কারাবাসের সময় সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আন্দোলন সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছে, সংগঠনের আর্থিক ব্যয় মিটানোর জন্য নিজের গায়ের গহনা এমনকি ঘরের আসবাব পর্যন্ত বিক্রি করে দিচ্ছে। কারাবন্দি স্বামীকে দেখতে যাবার সময় নিজহাতে তাঁর পছন্দের খাবার রান্না করে নিয়ে যাচ্ছে, স্বামীকে মুক্ত করার জন্য উকিলের সাথে পরামর্শ করছে। রেণুর এই জীবনচিত্র কি খুব সহজলভ্য? মোটেও না। তাহলে কি রেণুর কাছে কোনো যাদুর কাঠি ছিল? না, রেণুর কাছে কোনো যাদুর কাঠিও ছিল না। তবে রেণুর কাছে ছিল যাদুমন্ত্রের মতো প্রখর মেধা ও বুদ্ধিমত্তা, মানবিকতা ও দেশপ্রেম, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা এবং স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এই রেণু আর কেউ নন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা। রেণু শুধু একজন স্ত্রী নন, বধূ নন কিংবা মা নন, রেণু অবিভক্ত বাংলার রাজনীতির বিশাল মঞ্চের রূপকার। যে মঞ্চের সম্মুখে আছেন তার স্বামী, বাংলার দুঃখী মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বেগম ফজিলাতুন নেছা রেণু বাংলাদেশ নামক ব-দ্বীপীয় রাষ্ট্রটির জন্মক্ষণের সাক্ষীই শুধু নন, এই রাষ্ট্রটির জন্মের পেছনে রয়েছে তার অসামান্য অবদান। ঠিক এখানেই রয়েছে রেণুর স্বরূপ উদঘাটনের প্রয়োজনীয়তা।
Title
ফজিলাতুননেছা মুজিবের রাজনৈতিক দর্শন ও একুশ শতকের নারীর ক্ষমতায়ন
সুফিয়া বেগম বর্তমান সময়ের একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক। জন্ম ১৯৬৪ সালে, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলে। পিতা মরহুম আব্দুল কাদের আকন্দ। মাতা রাশেদা বেগম। সুফিয়া বেগম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ পাশ করেছেন । স্কুল জীবন থেকেই তার লেখালেখির শুরু। এযাবৎ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৭টি। পেশায় ব্যাংকার ।।