অষ্টাদশ শতাব্দীর শিল্পবিপ্লব যেমনভাবে মানুষের জীবনে অভূতপূর্ব প্রগতির জোয়ার নিয়ে আসে, তেমনি মানুষের অনাবিল ও জটিলতাহীন জীবনেও তা অনেকগুলো জটিল সমস্যার সৃষ্টি করে। এর অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো শ্রমিক সমস্যা। বর্তমানে পৃথিবীর রাষ্ট্রব্যবস্থাপনার প্রতিটি অণু-পরমাণুকে যা তীব্রভাবে ঝাঁকুনি দিচ্ছে। শ্রমিকরা আজ হাজারো শোষণের নিগড়ে পিষ্ট। আজকের পৃথিবী তাদের সমস্যা প্রকৃতভাবে অনুধাবন করতে এবং এর যথার্থ সমাধান দিতে চরমভাবে ব্যর্থ।
জগৎজুড়ে কি এমনিভাবে ‘মার খাবে দুর্বল’? এর কি কোনো প্রতিকার নেই, প্রতিবিধান নেই? সর্বহারাদের জীবনে এই বিড়ম্বনার কি শেষ নেই?
ইসলাম করেছে এর ন্যায়ানুগ প্রতিকার। খোদাওন্দ করীমের বলিষ্ঠ প্রত্যয় ও নবি-প্রদর্শিত রাহনুমায়ির আশ্রয়ে ইসলাম চায় এমন এক সমাজব্যবস্থা কায়েম করতে, শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার সৌহার্দ্যমূলক পারস্পরিক ভিত্তিতে এমন এক বিধানের প্রচলন করতে, যেখানে শোষণ নেই, নিপীড়ন নেই, সর্বোপরি নেই দুর্বলকে পিষে খতম করার জঘন্য প্রবণতা। আকাশ যেখানে ভারাক্রান্ত হয় না সর্বহারাদের আর্তনাদে, যেখানে স্বাধীনতার অনাবিল আনন্দে বয়ে চলে জীবনপ্রবাহ, চোখ প্রোজ্জ্বল হয়ে ওঠে এক নতুন সূর্যের ইঙ্গিতে।
এ থেকেই শ্রমিক সমস্যা ও তার সমাধানের বাস্তব আলোচনা সংবলিত এই পুস্তক। এ তাদের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার কর্মসূচি, জাতি একে কার্যকর করে তুললেই আমাদের শ্রমসার্থক।
ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ (জন্ম: ৭ মার্চ ১৯৫০) বাংলাদেশের একজন আলোচিত ইসলামি ব্যক্তিত্ব। তিনি শোলাকিয়া জাতীয় ঈদগাহের ইমাম, জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার সভাপতি, ইকরা বাংলাদেশের পরিচালক। এক লক্ষাধিক আলেম কর্তৃক স্বাক্ষরিত জঙ্গিবাদবিরোধী ফতোয়ার জন্য তার পরিচিতি রয়েছে। আলেম সমাজে বাংলা ভাষার বিস্তারে লাজনাতুত তলাবা নামক একটি সংগঠনের কর্ণধার, কওমি মাদ্রাসার সরকারি স্বীকৃতি আদায়, মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সরকারি ভাতা বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পরিচালক ছিলেন। মাসিক পাথেয় পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সহ তার স্বরচিত ও অনুবাদকৃত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এছাড়াও তিনি এশিয়া ফাউন্ডেশনের বিশেষ পরামর্শক, ফাউন্ডেশন ফর গ্লোবাল পলিসি স্টাডিজ, ইসলামিক রিসার্চ কাউন্সিল অব বাংলাদেশ, ইকরা মাল্টিমিডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড লিমিটেডের সভাপতি এবং ইসলামী গবেষণা পরিষদ এবং বেসরকারি দাতব্য সংস্থা ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।