১২৩৪ খ্রিষ্টাব্দ । মােঙ্গলদের আক্রমণে সারা পৃথিবী ছিন্নভিন্ন। সমস্ত শক্তি মাথা নত করে তাদের সামনে। মনুষ্যত্ব হয়েছিল পদদলিত। ডুকরে ডুকরে কাঁদছিল মানবতা। কোনাে শক্তিই সক্ষম হচ্ছিল না তাদেরকে প্রতিরােধ করতে। যেন জয়ই ছিল তাদের একমাত্র ভাগ্যলিপি। বাগদাদ, বুখারা, সমরকন্দসহ মুসলমানদের রক্তে রঙিন করে দিয়েছিল পৃথিবী। দেশ ছেড়ে পালিয়ে জীবন বাঁচাতে তৎপর ছিল বিক্ষিপ্ত মুসলমানরা। কিন্তু এরপরও তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাচ্ছিল না তাঁরা। মুসলিম বসতিগুলােতে ঈগলের মতাে হিংস্র থাবা বসিয়ে পৌঁছে দিত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে । যার ফলে খাওয়ারেজম, সমরকন্দ, নিশাপুর, বলখ, বুখারাসহ, অগণিত শহর এবং ছােট-বড় বিভিন্ন বসতি থেকে অসংখ্য মানুষ দলে দলে, কাফেলাবদ্ধ হয়ে মােসেল ও দামেস্কের রাস্তা ধরে হচ্ছিল মিসরমুখী। তয়াস, উমাইর, আবু নুয়াস, হাওয়াজিন এবং তাদের কাফেলার সাথী-সঙ্গীরা প্রত্যেকেই ছিল এমন, যাদেরকে ধ্বংস করে সহায়-সম্বল ও বাসস্থানহীন করেছিল এই তাতারীরাই। ইয়াদুন নদীর কিনার ধরে বিশাল এক পাহাড়ে আশ্রয় নেয় তাঁরা। সংঘবদ্ধ হয়ে সেখান থেকে শুরু করে তাতারীদের উপর হামলা। পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী রাস্তা দিয়ে মুসলমান কাফেলা যাওয়ার সময় লুটতরাজ ও ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ। চালাত তাতারীরা ।। কাফেলার সবাই মিলে নিজেদের সিপাহসালার নির্ধারণ করে উমাইরের পিতা খিযামকে। তাঁর মৃত্যুর সময় উমাইর যেহেতু অল্পবয়স্ক বালক ছিল, তাই নিজেদের সিপাহসালার নিযুক্ত করা হয় তুয়াসকে। আর উমাইরকে করা হয় সহকারী সালার। বসতির সকল কাজ সম্পাদিত হত পরামর্শ অনুযায়ী। যৌবনে উপনীত হয়েছে উমাইর । গােত্রীয় যেকোনাে কাজ করার মতাে এখন সে শক্ত-সামর্থ্যবান। প্রতিরােধ শক্তি গড়ে তুলে তাতারীদের সামনে। সে কি পারবে তাতারীদের মােকাবেলা করতে! পারবে কি মােঙ্গলদের আক্রমণের সামনে টিকে থাকতে! নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষা করা কি তাঁর দ্বারা সম্ভব হবে! অনবদ্য এক ইতিহাস নিয়ে সাজানাে হয়েছে ঈগল উপত্যকা বইটি। বই : ঈগল উপত্যকা ।