ফ্ল্যাপে লিখা কথা মহাস্থানগড়ের ইতিহাস ভিত্তিক এই উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে একটি অনন্য সংযোজন।
খ্রীস্ট জন্মের বহু আগে থেকেই মহাস্থানগড়ের বা পুন্ড্রনগরের রাজাধিরাজ শার্দূলবিক্রমের প্রজাবান্ধব হিসেবে সুনাম ছিল। তারই বংশধরেরা প্রায় দুই হাজার বৎসর পুন্ড্রনগরে রাজত্ব করত। মূলতঃ এই সময়ের শেষেই ইসলামধর্ম এদেশে প্রচারিত ও প্রসারিত হয়। এই পৌরাণিক যুগ থেকে খ্রীস্টজন্মের প্রায় পনেরশত বৎসর পর্যন্ত বহু কাহিনী লোকমুখে ও ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। সেইসব কাহিনীর ভিত্তিতেই এই গ্রন্থটি রচিত হয়েছে।
ভূমিকা সারাবিশ্বে পৌরাণিক কাহিনী সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে উপন্যাস সর্বাপেক্ষা অধিক জনপ্রিয় গ্রীস বা রোমান mythology! ভারতীয় হিন্দু পৌরাণিক উপন্যাসের সংখ্যা কম নয় এবং সেগুলোও কম জনপ্রিয় নয়।
বাংলাদেশের সভ্যতা মহেঞ্জোদারো অথবা হরপ্পার সভ্যতার সমসাময়িক। শিলাযুগ বা প্রস্তুর যুগের সভ্যতার সাথে সাথেই এই দেশে যে সভ্যতার সূচনা হয় তার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল পুণ্ড্রনগর বা মহাস্থানগড়ের সভ্যতা। খ্রিস্টজন্মের কয়েক শতাব্দী পূর্বে এই নগর সভ্যতার বিকাশ ঘটে এবং প্রায় দুই সহস্র বৎসরাধিক মানব সভ্যতার এক চরম উৎকর্ষস্থল হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে।
এই সভ্যতার উত্থানের এবং পতনের সময় যে সমস্ত কিংবদন্তী বা পৌরাণিক কাহিনী বিদ্যমান সেগুলোকে একত্রে সুখপাঠ্য এবং বিনোদনজনক করে জনসমক্ষে প্রচারের জন্যই আমার এই প্রচেষ্টা। আশা করি এতে করে বাংলাদেশেল মানুষ তাদের নিজেদের অতীত সম্পর্কে জেনে গর্বিত ও অনুপ্রাণিত হবে। তবে এটা ইতিহাস নয়। ইতিহাস ভিত্তিক একটা উপন্যাস মাত্র। এর নায়ক-নায়িকারা সবাই রক্তমাংসের তবে কাল্পনিক মানুষ। তাদের জীবনের, তাদের ভারোবাসা ও প্রেমের কাহিনীগুলো আশা করি বিদগ্ধ পাঠক সমাজ উপভোগ করবেন।
১৯৬০ সাল থেকে চার বছর লন্ডনে ক্যান্সার বিষয়ক অধ্যয়ন শেষে লন্ডন ফ্যাকাল্টীতে রেকর্ড। সৃষ্টিকারী ফজলুল করীম দেশে ফেরেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক হিসাবে তিনি রেডিওথেরাপীতে পােস্টগ্র্যাজুয়েট কোর্স শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে সেই কোর্স লন্ডন ফ্যাকাল্টীতে স্বীকৃত ও অনুমােদিত হয়। তিনি এদেশে ও বিদেশে বহু নতুন উদ্ভাবনাময় চিকিৎসার প্রবর্তক । এর জন্য বিশ্বের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ মহলে তার অবদান স্বীকত। এখন বাংলাদেশে অবসরপ্রাপ্ত জীবনে ক্যান্সার বিষয়ক বহু কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকেও তিনি আবার সাহিত্যচর্চা শুরু করেছেন। মানুষের বিশেষ করে ক্যান্সারের রােগিদের চমকপ্রদ ঘটনা, সংঘাতময় প্রেম ও জীবন কাহিনীর অভিজ্ঞতা গল্প কাহিনী ও উপন্যাসের মাধ্যমে তুলে ধরে তিনি পাঠকদের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করেন। তার সাহিত্যের অনুপ্রেরণা ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের প্রেম আনন্দ শােক দুঃখ ও ব্যথা বেদনা। তার বাংলা বইয়ের মধ্যে দুটি উপন্যাস আঁধারে আলাে (২০০৪), দুরন্তকাল (২০০৪) এবং হল্যান্ড থেকে প্রকাশিত Death এর অনুবাদ মৃত্যু (২০০৫) উল্লেখযােগ্য। তার ছােটগল্প উপন্যাস ও প্রবন্ধ প্রথম আলাে ও কালি ও কলমে প্রকাশিত হচ্ছে। এ বছরে আরাে প্রকাশিত হচ্ছে ক্যান্সারঃ মৃত্যু অবধারিত নয়।