উপস্থিত জনতার মধ্যে চাপাস্বরে কথা চলছে। প্রচণ্ড আতঙ্ক বিরাজ করছে সবার মধ্যে। নাক কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছে সবাই দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে। বিকৃত হয়ে গেছে জগবন্ধুর মুখ। সবাই বুঝে গেছে এটা কুষ্ঠ। চন্দন কবিরাজ বলেছে রোগ অনেকদূর ছড়িয়ে গেছে। নাকটা খসে গেছে জগবন্ধুর। বোধশক্তি আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। দৃষ্টি ঘোলা হয়ে গেছে। স্মৃতি দুর্বল হয়ে গেছে তার। তবে কার্ভালহোর বলা কথাগুলো কানে বাজছিল জগবন্ধুর যেন সেগুলো মাত্র শোনা। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে। " এই নরাধম এক সামান্য বারবণিতার মূর্তি গড়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে। এই নারী একজন বিশ্বাসঘাতক। ওই নারীর মূর্তি গড়ে সে প্রমাণ করেছে এই বিশ্বাসঘাতকের বিশ্বাসে সে বিশ্বাসী। রাজ্যে এই নরাধমের জায়গা হতে পারে না। তার মৃত্যু হতে পারত কংকর নিক্ষেপের মাধ্যমে। কিন্তু দয়াবশত তার শাস্তি হ্রাস করা হয়েছে। তাকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হবে," গম্ভীর কণ্ঠে ঘোষণা করলেন শশাঙ্ক আচার্য। উপস্থিত জনতায় আবারো গুঞ্জন শুরু হল। আর জগবন্ধু পুরোহিতের কথায় আবার ফিরল প্রায় বিস্মৃত চারপাশে। তাকে নিক্ষেপ করা হল জ্বলতে থাকা উন্মত্ত আগুনের কুণ্ডে যে প্রবল আক্রোশে পুড়িয়ে দেবে সব। অদ্ভুত ব্যাপার তার কোন অনুভূতি হচ্ছে না। এতটুকু ব্যথার অনুভূতি হচ্ছে না তার। তার মস্তিষ্ক গলে যাচ্ছে যেন। ঘোলা হয়ে আসছে তার দৃষ্টি। ঘোলাটে দৃষ্টিতে সে শেষবারের মত দেখল শেহেরবাঈ'র মুখটা। তবে যাকে সে দেখতে পেয়েছিল সে ছিল অবিকল তার গড়া মূর্তির বিম্ব। অবগুণ্ঠিত বাস্তবের শেহেরবাঈ এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য সহ্য করতে পারেনি বলে চলে গিয়েছিল অনেক আগেই। তার নিষ্প্রাণ হতে থাকা ঠোঁটে এক চিলতে তৃপ্তির হাসি দেখা গেল। সে মনের মত করে তবে গড়তে পেরেছে শেহেরবাঈকে! হতভাগ্য জানতেই পারল না শেহেরবাঈ সত্যিই এসেছিল।
লেখালেখিটা শখের বশে শুরু। তারপর এই শখ কীবোর্ডের ছোঁয়ায় পৌঁছে গেল পাঠকের কাছে অনলাইনে... পাঠকের উৎসাহে প্রকাশিত হল প্রথম উপন্যাস অভিনেতা। ছোটগল্পে নিয়মিত হলেও উপন্যাস হাতেখড়ি অভিনেতা দিয়ে। প্লটে অভিনবত্ব এবং লেখনশৈলীর ভিন্নতা মুগ্ধ করেছিল পাঠককে। দ্বিতীয় উপন্যাস মিস্ট্রি থ্রিলার চন্দ্রভুক একদম ভিন্ন জনরার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় পাঠককে। পাঠক এই লেখককে আপন করে নেয় ভালবেসে। লেখালেখির এই আলাপন চলুক-চলুক ভালবাসার বিনিময়।