দ্য নিউ কিংডম / উইলবার স্মিথ দীর্ঘ পাঁচটি বছর পর অ্যানশিয়েন্ট ইজিপ্ট সিরিজের নতুন বই 'দ্য নিউ কিংডম' আমরা হাতে পেলাম। আগের ছয়টির মতো এটাও পাঠকদের হাতে তুলে দেবার জন্য তর সইছে না আমাদের! আশা করি, লসট্রিস-টাইটা-টানুস-হুই-এর নতুন এই আখ্যান আপনাদের মন জয় করতে সক্ষম হবে। কাহিনী সংক্ষেপঃ মিশরের একেবারে কেন্দ্রে... দেবতাদের সদাজাগ্রত দৃষ্টির সামনে... জন্ম নিচ্ছে নতুন এক শক্তি... লাহুন নগরীতে বিলাসী জীবন যাপন করে হুই। অনুরাগী বাবার নয়নের মণি হিসেবে পরিচিত ছেলেটা গড়ে উঠছে ভবিষ্যৎ-শাসক হিসেবে। তাই ওর নিয়তি যেন স্থির করে রাখা। কিন্তু বেচারা জানে না, সুন্দরের মুখোশ পরে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে অশুভ! ক্ষমতার লোভ আর ঈর্ষার দংশনে জর্জরিত ইসেতনফরেত, হুইয়ের সৎ-মা ও সৎ-ভাই কোয়েন ষড়যন্ত্র করছে ওর বাবার পতন ঘটাবার। আর সেই দোষ হুইয়ের ঘাড়ে ফেলে দখল করে নেবে নগরীর ক্ষমতা। নির্বাসিত, একাকী হুই নিজেকে আবিষ্কার করল হিকসসদের বন্দি হিসেবে। পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে আর বোন ইপোয়েতকে উদ্ধার করার প্রতিজ্ঞায় হুই বশ্যতা স্বীকার করে নিলো মিশরের শত্রুর। তাদের কাছে শিখল যুদ্ধের কৌশল, পরিণত হলো দক্ষ সারথিতে। কিন্তু মিশরের খোদ প্রাণকেন্দ্রে যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হবে, তা কি আর জানত সে? খাপে-খাপ মিলে গেল সব টুকরো। খোদ দেবতারাই যোগ দিলেন দৃশ্যপটে। মিশরিয় সেনানায়ক টানুস আর বিখ্যাত জ্ঞানী ব্যক্তি টাইটার পাশে যুদ্ধরত অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করল হুই। পথ বেছে নিতে হবে ওকে-পুরাতন দুনিয়ার বীর হবে, নাকি হবে নতুন সাম্রাজ্যের একজন প্রভু?
উইলবার এডিসন স্মিথ, সাহিত্য জগতে উইলবার স্মিথ নামে যার ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে | উইলবার স্মিথ মূলত একজন অ্যাডভেঞ্চারধর্মী থ্রিলার লেখক। ১৯৩৩ সালের ৯ জানুয়ারি উত্তর রোডেশিয়ার ব্রোকেনহিলে জন্মগ্রহণ করেন এ লেখক। শিশুবয়স থেকে বইয়ের প্রতি যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিলো তার অবদান সম্পূর্ণ স্মিথের মায়ের। সেকেন্ডারি স্কুলে পড়ার সময়ে স্কুল ম্যাগাজিনের গুরুভাগ দায়িত্বই ছিলো তার কাঁধে, তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতেন সাংবাদিক হওয়ার। কিন্তু পিতার উপদেশে সে পথে আর যাননি, বেছে নিয়েছিলেন কর্পোরেট জীবন। রোডস ইউনিভারসিটি থেকে স্নাতক শেষ করে চার্টার্ড একাউন্টেন্ট পদে নিযুক্ত হন। তবে স্বপ্নের কাছে শেষমেশ নতি স্বীকার করতে হয়েছিলো। ১৯৬৪ সালে ‘হোয়েন দ্য লায়ন ফিডস’ উপন্যাস প্রকাশের মাধ্যমে তার সাহিত্যজগতে প্রবেশ, কিন্তু শুরুটা তত সহজ ছিলো না। এর আগে যে পান্ডুলিপিটা তিনি প্রকাশকদের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন তা ২০ বার প্রত্যাখান করা হয়েছিলো। তবে প্রথম উপন্যাস প্রকাশের পর তাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। এই বিলিয়নিয়ার লেখকের এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪৬টি। উইলবার স্মিথ এর বই সমগ্র এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো ‘দ্য ডায়মন্ড হান্টারস’, ‘দ্য ডার্ক অফ দ্য সান’, ‘ক্রাই উলফ’, ‘ওয়াইল্ড জাস্টিস’, কোর্টনি সিরিজ, ব্যালান্টাইন সিরিজ, প্রাচীন মিশর সিরিজ। সাধারণত তার বেশিরভাগ উপন্যাসই উল্লেখিত ৩টি সিরিজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাপী তার বইসমূহের ১২০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে। উইলবার স্মিথ এর অনুবাদ বই সমূহ ২৬টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে যা ইংরেজি ভাষায় লেখা বইগুলোর মতো সমান জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ব্যক্তিগত জীবনে প্রথম দুই স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হলেও তৃতীয় স্ত্রীকে তিনি ভালোবাসতেন। তবে ক্যান্সারে তার স্ত্রীর অকাল মৃত্যু ঘটে। বর্তমানে চতুর্থ স্ত্রী মোখিনিসোর সাথে লন্ডনে বসবাস করছেন এই বর্ষীয়ান লেখক।