হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের স্থপতি। যেসব মহাপুরুষ পৃথিবীতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তাদের অধিকাংশই একই সঙ্গে ছিলেন লেখক, সংস্কৃতিমনস্ক, দার্শনিক এবং চিন্তাবিদ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ছিলেন তাঁদেরই মতো বিশ^মানের রাষ্ট্রনায়ক, সংস্কৃতিতাত্ত্বিক ও সাহিত্যিক। এমনকি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও অগ্রসর। যে ভাষা-আন্দোলন বাঙালি জাতিসত্তা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের সূতিকাগার, তার সূচনায় ১৯৪৮ সালে এবং তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের চুড়ান্ত পরিণতিতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। চিন্তা-চেতনা ও মননে পরিশ্রুত বঙ্গবন্ধু ছিলেন সমগ্র বাঙালি জাতির প্রতীক। ভাষা ও সংস্কৃতিতে তিনি যেমন বাঙালিয়ানার বিকাশ ঘটিয়েছেন, একইভাবে অনন্যসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন সাহিত্য-সৃজনেও। তাঁর স্বহস্তে লিখিত ডায়েরির পাতা এবং প্রকাশিত তিনটি গ্রন্থে তার বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যায়। তাঁর প্রথম দুটি গ্রন্থ ব্যাপক অর্থে কারাসাহিত্য। তবে প্রচলিত কারাসাহিত্যের চেয়ে ভিন্নতর উচ্চতায় অভিষিক্ত। তৃতীয়টি ভ্রমণসাহিত্য; এককথায় অনন্য, যা কেবল রবীন্দ্রনাথের ‘রাশিয়ার চিঠি’ গ্রন্থের সঙ্গেই তুলনীয়। জীবনরসের নানা মনস্তাত্ত্বিক বিষয় উদ্ঘাটনে তাঁর সৃষ্টি যেন আলোঝলমল এক নান্দনিক ভুবন। বর্তমান গ্রন্থে মহাকালের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরল মানসসত্তার বৈচিত্র্যময় পরিচয় বিধৃত হয়েছে। জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।