কবিতা হচ্ছে শব্দ প্রয়োগের ছান্দসিক কিংবা অনিবার্য ভাবার্থের বাক্য-বিন্যাস, যা একজন কবির আবেগ-অনুভূতি, উপলব্ধি ও চিন্তা করার সংক্ষিপ্ত রূপ এবং তা অতি অবশ্যই উপমা-উৎপ্রেক্ষা-চিত্রকল্পের সাহায্যে আন্দোলিত সৃষ্টির উদাহরণ। কবি অহনা নাসরিনের কাছে কবিতা হচ্ছে, ঘোর কিংবা কল্পনার নিজস্ব ভুবন। যে কল্পনা সমস্ত জীবনে বিচরণ করে আহরণ করে এক অসাধারণ আনন্দের জ্বালা, যা কখনো শেষ হওয়ার নয়। তাঁর প্রতিটি কবিতা উপমা, উৎপ্রেক্ষা, রূপক, চিত্রকল্প আর ভাব-ভাবনা-ভাষার এক অপূর্ব মেলবন্ধন। কবির কবিতার মনোজগৎ অন্য দশজন কবির কবিতা থেকে আলাদা। এই আলাদা জগৎই তাঁকে কবিতার ভুবনে নিজস্ব স্বাতন্ত্র্যবোধ ও ঐশ্বর্যময় ভিত তৈরি করতে সহায়তা করেছে। শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে তাঁর সতর্কতা অনায়াসে কবিতার পাঠককে মুগ্ধ করে। কবির রচিত ছোট ছোট কবিতা মেদহীন, লাবণ্যময়, সুরভি ‘অলস ঝরাপাতা’ বইটিকে করেছে ঋদ্ধ। গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর অবাধ বিচরণ। ‘অলস ঝরাপাতা’ কবির ষষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায় দৃঢ়ভাবে উচ্চারিত হয়েছে দ্রোহ-প্রেম-বিরহ, মান-অভিমান আর কবি মনের এক অতৃপ্ত হাহাকার। নারীর বেদনার কথাটিও সূক্ষভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কোনো কোনো কবিতায়। ‘অলস ঝরাপাতা’ কাব্যগ্রন্থটি পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠবে এ আমার বিশ্বাস।