প্রায় ছয় মাস হয় লেখক রাসবিহারী হোগলাহোগী হক বাড়ির ছাদঘরটায় ভাড়া থাকেন। নিভৃতচারী এই লেখক না তো কারো সাথে মেশেন, না কারো সাথে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অযাচিত অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তিনি তাই দরজায় বড় করে নোটিশ এঁটে দিয়েছেন, “অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষেধ, অনুমতি নেয়াও নিষেধ।” সব নিয়মের কিছু ব্যতিক্রম থাকে, এখানেও তাই। নিভৃত আচরণ ছাপিয়ে লেখকের সখ্যতা গড়ে ওঠে সে বাড়ির কিশোরী কন্যা শুচির সাথে। মেয়ের আদর পাওয়া শুচি লেখককে ডাকেন হোগলা বাবা সংক্ষেপে হোগলাবা। শুচির হোগলাবা প্রায়ই দু-তিনদিনের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে যান আবার ফিরেও আসেন। তেমনি একবার যখন তিনি নিরুদ্দেশ হলেন কারা যেন তার ঘরটাতে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ করল, কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার ঘরের কিছুই খোয়া গেল না। এ ঘটনার পর লেখক রাসবিহারীর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। ঘটনার পেছনের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে তিনি তাঁর সাথে থাকা শতবছরের পুরোনো ডায়ারিটা শুচিকে দিয়ে বলেন, ডায়ারিটা যেন ও খুব যত্নে রাখে, গোপনে রাখে। কী লেখা ছিল সেই ডায়ারিতে যার জন্য লেখক ছুটে ফিরেছিলেন সাংস্কৃতিক রাজধানীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে! কী সেই মহান সত্য যা বদলে দিতে পারে মুঘল রাণী সম্পর্কে বর্তমান মানুষের ধ্যানধারণা! কেন-ই বা একজন চীনা প্রত্নতত্ত্ববিদ মৃত্যুর ঠিক আগে আগে একজন বাংলাদেশি তান্ত্রিকের নিকট চিঠি পাঠিয়ে আকুতি জানালেন, “তায়্যিবাকে শান্তিতে ঘুমোতে দিয়ো।” কে এই তায়িব্যা! কী যোগসূত্র তাঁর সাথে মুঘল সাম্রাজ্যের! কী যোগসূত্র তাঁর সাথে চীনা প্রত্নতত্ত্ববিদের!
মিনহাজুল ইসলাম মাসুম। সাহিত্যজগতে যার আর্বিভাব বিংশ শতকের শেষ প্রান্তে। লিখেছেন সৃজনশীলতার প্রায় সকল শাখায়। কালের প্রবক্তা হিসেবে তরুণ মনের ভাবনাগুলোকে সাজিয়ে চলেছেন শব্দের ব্যঞ্জনায়। তার লেখায় প্রাণ-প্রকৃতির সৌন্দর্যপ্রিয়তা, নিপীড়িতের আর্তনাদ, মাতৃভাষা, স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম, তারুণ্য ও আদর্শের জয়গান ইত্যাদি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। প্রকাশিত হয়েছে গদ্য, পদ্য এবং বিশেষ করে শিশুতোষ লেখাসহ অনেকগুলো গ্রন্থ। কর্ণফুলীর গাঙচিল, স্লো পয়জনিং, হৃদয়ে বাংলাদেশ, মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন, হৃদয় গোলাপের পাপড়িগুলো, বাংলা সাহিত্যের বিবিধ অনুষঙ্গ, বাবার খুশি মায়ের হাসি, ক্রীতদাস থেকে প্রধানমন্ত্রী, ছোটদের বিশ্বনবি (সা.), ভুতের কবলে দরবেশ বাবা, ইসলামে হজ্ব ও উমরার বিধান, নবিজি (সা.)-এর সংগ্রামী জীবন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্যগ্রন্থ। তিনি সম্পাদনা করছেন জনপ্রিয় ‘ইদানীং’ লিটলম্যাগ। লাভ করেন : মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশন, ডিজিটাল বাংলাদেশ পাবলিসিটি কাউন্সিল, ইউনাইটেড মুভমেন্ট হিউম্যান রাইটস্ কর্তৃক মানবাধিকার শান্তি পদক ও আল ইহসান ফাউন্ডেশন সম্মাননা। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ভ্রমণ করেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভুটান। জন্ম আশির দশকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলানিকেতন অপরূপ কর্ণফুলীর তীরে অবস্থিত চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার ধোরলা গ্রামে।