তাসাউফের নামে কুরআন-সুন্নাহ বিবর্জিত অনেক বিষয়কে ইসলামের অন্তর্গত বলে চালিয়ে দেয়ার প্রয়াস যেভাবে প্রত্যক্ষ করা যায় সেভাবে তাসাউফকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। বলতেও অনেককে নিঃশঙ্ক দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি এমন যে, কুরআন-সুন্নাহ পরিপন্থি বিষয় যেমন ইসলাম হতে পারে না আবার তাসাউফ বিষয়টিও ইসলামের বিপরীত কোনাে বিষয়বিধান নয়। বরং ইসলাম সমর্থিত একটি চিন্তা-দর্শন ও এর অনুশীলন। এরই ধারাবাহিকতায় তাসাউফের মতাে আরাে অনেক বিষয় নিয়ে মুসলিম উম্মাহ বেশ বাড়াবাড়ি, ছাড়াছাড়িতে লিপ্ত। যেমন- আউলিয়া কেরাম ও তাঁদের কারামত প্রসঙ্গেও এ ধরনের বাড়াবাড়ি, ছাড়াছাড়ি পরিলক্ষিত হয়। অথচ আউলিয়া কেরাম ও তাঁদের কারামত ইসলামেরই অনুসঙ্গ। সবিশেষ বড়পীর হযরত শেখ আবদুল কাদির জিলানি রাদি. ও তাঁর নানা কারামত প্রসঙ্গে বাড়াবাড়ি যেমন দেখা যায় তেমনি নিতান্ত সত্য কারামত প্রসঙ্গে অনেক হতভাগাকে নেতিবাচক মনােভাবে মন্তব্য করতেও শােনা যায়। ইবনে হাজর আসকালানির মতাে প্রাজ্ঞজনের এ বিষয়ে কলম ধরা উম্মাহর জন্যে কল্যাণের এবং উম্মাহর সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারার পথ সুগম করে। নিঃসন্দেহে তিনি আলােচ্য বইটিতে তাই করবার প্রয়াস পেয়েছেন। সনদসহ তিনি তাঁর জীবন ও কারামতকে প্রামাণ্য বর্ণনায় তুলে ধরেছেন। আবার এসব বিষয় নিয়ে আমরা যখন কর্তব্যরত হই তখন আমাদের গভীরভাবে আল্লাহর সেই বাণীর প্রতি খেয়াল রাখা উচিত, যাতে আল্লাহ ইরশাদ করেন- ‘কোনাে সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ যেনাে তােমাদেরকে ন্যায়বিচার না করতে প্ররােচিত করে।' (আল কুরআন, মায়েদা-৮) সব বিষয়ে মধ্যমপন্থা অবলম্বনই হেদায়তের প্রকৃত শিক্ষা। এ শিক্ষাই হােক আমাদের পথ ও পাথেয়। আমিন।