“পৃথিবীর সব গল্পই আসলে লেখা হয়ে গেছে” এ কথার সাথে শতভাগ সহমত পোষণ করেও আমরা নতুন গল্প লিখি, পড়ার জন্য নতুন গল্পের খোঁজ করি। মানব হৃদয়ের অনুভূতির ওঠানামা ও টানাপোড়েন সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে একই রকম হলেও ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভিন্ন ভিন্ন রঙ্গমঞ্চে মঞ্চস্থ হয় জীবনের নিত্যনতুন নাটক। আর সেই সব ঘটনাই হয়ে ওঠে আমাদের নব নব গল্পের উপজীব্য। যে উদ্বেগ নিয়ে প্রাচীন গুহামানব গুহার সামনে আগুন জ্বালিয়ে রাখত বন্য পশুর আক্রমণ থেকে নিজের পরিবারের সুরক্ষার উদ্দেশ্যে, সেই একই দুশ্চিন্তায় আজও মানুষ দরজার ছিটকিনি কিংবা গ্যাসের চুলা ঠিকমত বন্ধ হয়েছে কিনা তা দ্বিতীয়বার চেক করে। বদলে গেছে মানুষের পারিপার্শ্বিকতা কিন্তু বদলায়নি মানুষের আবেগ ও অনুভূতি, প্রেম ও সম্পর্ক, রক্তের রঙ ও হৃদয়ের স্পন্দনের মতই তা অকৃত্রিম, প্রথম প্রেমের প্রথম চুম্বনের মতই আদিম ও কালোত্তীর্ণ। সমসাময়িক সাহিত্যের শুদ্ধ অশ্লীলতামুক্ত পরিচ্ছন্ন ও মানসম্মত ধারাকে যারা এগিয়ে নিয়ে চলেছেন সামনের দিকে, এমন প্রতিশ্রুতিশীল গদ্য লেখকদের সেরা সৃষ্টিগুলো আবদ্ধ হয়েছে দুই মলাটের মাঝে, একত্রিত হয়েছে এই সংকলনে। এই সংকলনের প্রতিটি গল্পই দুর্দান্ত চৌম্বক শক্তির অধিকারী, যা প্রতিটি গল্পের প্রথম শব্দ থেকেই পাঠককে টেনে ধরে রাখার, আচ্ছন্ন করে রাখার মত ক্ষমতাসম্পন্ন। সংকলনের লেখকদের প্রত্যেকেই ইতোমধ্যেই ফেসবুকে কিংবা অনলাইনে নিজেদের পাঠকমহল তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন। এত নাম থাকতে কেন “শূন্যপুর”? কারণ এই সংকলন দৈনন্দিন জীবনের ক্লান্তি দূর করে পাঠককে নিয়ে যাবে আনন্দ বেদনা প্রেম ও জীবনবোধের এক অতুলনীয় ভুবনে, যাতে পাঠক ডুব দিতে পারেন এক আকর্ষণীয় গল্পের রাজ্যে। কিছুটা সময় প্রাত্যহিক একঘেয়েমি ভুলে গিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন এক অন্য জগতে। যেখানে পাঠক নিজেকে আবিষ্কার করবেন এক অনন্য উচ্চতায়, ভেসে বেড়াবেন পাখির পালকের মত কিংবা শিমুল তুলোর মত।
মৌলী, যার নামের অর্থ হলো পর্বতশীর্ষ বা পাহাড়ের চূড়া। জন্ম ১৯৮৬ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, বসবাস ঢাকায়। মা-বাবার প্রথম সন্তান, এক কন্যার জননী। পেশায় ডক্টর, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করে বর্তমানে শিশু মেডিসিন বিষয়ে এফসিপিএস কোর্সে অধ্যয়নরত। হলিক্রস স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছেন। নেশা পড়া, উইপোকার মতো পুরির ঠোঙা থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পর্যন্ত সবই গোগ্রাসে গিলতে পছন্দ করেন। স্বপ্ন দেখেন বৈষম্যমুক্ত পৃথিবীর, যেখানে নারী-পুরুষ এবং ধনী-গরীবের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই।