পলাশীর প্রান্তরে জাতির ভাগ্যবিপর্যয়ের সূচনা থেকে শুরু করে মহীসুরে সুলতান ফতেহ আলী খান টিপুর উত্থান পর্যন্ত সময়ের পটভূমিকায় এ উপন্যাসটি রচিত। নবাব আলীবর্দী খানের শাসনামলের যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি দেশে অসংখ্যা গাদ্দারের বিষফণা তোলার সুযোগে বৃদ্ধ নবাবের ইন্তেকালের পর প্রাণাধিক প্রিয় দৌহিত্র নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার ভাগ্যবিপর্যয়ের পথ খোলাসা করেছিল, যেসব কারণে সিরাজ-উদ-দৌলাকে নিজের জীবন দিয়ে পিতামহের ভুলের মাশুল দিতে হয়েছিল; আর যেভাবে স্বার্থপর মীর জাফর, জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফরা সিরাজ-উদ-দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করার ষড়যন্ত্র পাকা করেছিল, ‘মোয়াজ্জম আলী’ তে লেকক তারই একটি অনবদ্য চিত্র তুলে ধরেছেন। সমগ্র উপমহাদেশে মুসলমানদের ভাগ্যবিপর্যয় আর ব্রিটিশ বেনিয়ার শাসন কায়েম হওয়ার মূলে আমাদের কলঙ্কের কাহিনী চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হয়েছে এতে। বিশ^াসঘাতকতা, স্বার্থপরতা ও দেশদ্রোহিতার জঘন্য ষড়যন্ত্রের জাল পাকাপোক্ত করে ভাগীরথীর তীরে পলাশীতে সিরাজ-উদদৌলার পঞ্চাশ হাজার সৈন্যের রক্তের হোলিখেলার নির্মম ও হৃদয়বিদারক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে দরদ মিশিয়ে। মূলত পলাশীতে মুসলমানদের সুকৌশলে হারিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে উপমহাদেশের স্বাধীনতা-সূর্যকে দু’শ বছরের জন্য অস্তমিত করা হয়। নসীম হিজাযীর বিখ্যাত সেই মোয়াজ্জেম আলী উপন্যাসের প্রথম খ- যার নাম দিয়েছি ‘পলাশীর প্রহসন’
Nosim Hijajee শরীফ হুসাইন (ছদ্মনাম নসিম হিজাজী হিসাবে বেশি পরিচিতি, জন্ম:১৯১৪ - মৃত্যু: ২ মার্চ ১৯৯৬) হলেন একজন পাকিস্তানি উপন্যাসিক ও লেখক, যিনি লেখালেখির সময় নসিম হিজাজি ছদ্মনাম ব্যবহার করেন। বাল্য ও কৈশোর কাল গ্রামে কাটলেও তার সোনালী যৌবনটুকু দখল করে আছে ঐতিহাসিক লাহোর শহর। এখানেই তিনি লেখাপড়া করেন এবং লাহোর ইসলামীয়া কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে ডিগ্রী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি একজন উর্দু ভাষার লেখক। হিজাজী পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার ধারওয়াল শহরের পাশের একটি গ্রাম সুজানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই ১৯৪৭ সালে তার পরিবার লাহোরে বসবাস শুরু করে। তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় পাকিস্তানে কাটিয়েছেন এবং ১৯৯৬ সালের ২ মার্চ তারিখে ইন্তেকাল করেন।