দুনিয়ায় কত প্রিয়জন আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। সমাজে ওদের কত প্রয়োজন ছিল। অনেকের কাজ এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু তা দেখেনি। গ্রানাডা ছাড়ার আগে ভাবতাম, জীবনের শেষ শয্যা হবে তোমার পিতার পাশে। কিন্তু শেষবার যখন কবরস্থানে গেলাম আর ভাবলাম জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাতে হবে দূর বিজনে, তখনকার অসাহায়ত্বের বেদনা তোমাকে আর বলতে চাই না। আলফাজরা এসে মনে হলো, গ্রানাডা নয়, এখানেই আমার কবরের জন্য একটা স্থান খুঁজে নেওয়া উচিত। বেটা আমার, তুমি তো এখানকার শত বছরের পুরনো বকরস্থান দেখেছ। গোররক্ষী ওখানে তারিকের সময়কার কয়েকজন শহীদের কবর আমাকে দেখিয়েছে। মৃত্যুর আগে মরক্কো যাওয়া না হলে সেই শহীদদের পদতলেই আমায় দাফন করো। ঈদের দিন হাজার হাজার মানুষ সে কবরগুলো জিয়ারত করে। এ অন্তিম ইচ্ছাটা গোররক্ষীকে বলেছিলাম। আমার কবর পাকা করার প্রয়োজন নেই। ইতিহাসের পাতা থেকে হয়তো আমার নাম মুছতে পারব না; কিন্তু কবরের কোনো চিহ্ন না রাখাই হবে আমার প্রতি তোমার অনুগ্রহ। নয়তো আমার আত্মা কষ্ট পাবে। আবু আবদুল্লাহ, কোনো জাতির সালতানাত ধ্বংস হয়ে গেলে স¤্রাটদের শেষ চিহ্ন মুছে যায় ।আমি সে স¤্রাটের মা, যার হাতে নিশ্চিহ্ন হয়েছে স্পেনের গৌরবময় মুসলিম সালতানাত। আলীশান কবরের পরিবর্তে স্মৃতিচিহ্নহীন ভাঙা কবরের ধুলো হয়তো আমায় মানুষের অভিশাপ থেকে রক্ষা করতে পারে। এর বেশি আর কী চাইতে পারি আমি!... জানতে পড়–ন স্বপ্নের রাজকুমার।
Nosim Hijajee শরীফ হুসাইন (ছদ্মনাম নসিম হিজাজী হিসাবে বেশি পরিচিতি, জন্ম:১৯১৪ - মৃত্যু: ২ মার্চ ১৯৯৬) হলেন একজন পাকিস্তানি উপন্যাসিক ও লেখক, যিনি লেখালেখির সময় নসিম হিজাজি ছদ্মনাম ব্যবহার করেন। বাল্য ও কৈশোর কাল গ্রামে কাটলেও তার সোনালী যৌবনটুকু দখল করে আছে ঐতিহাসিক লাহোর শহর। এখানেই তিনি লেখাপড়া করেন এবং লাহোর ইসলামীয়া কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে ডিগ্রী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি একজন উর্দু ভাষার লেখক। হিজাজী পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার ধারওয়াল শহরের পাশের একটি গ্রাম সুজানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই ১৯৪৭ সালে তার পরিবার লাহোরে বসবাস শুরু করে। তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় পাকিস্তানে কাটিয়েছেন এবং ১৯৯৬ সালের ২ মার্চ তারিখে ইন্তেকাল করেন।