একটি গল্পের পরিসর ছোটো হয় বলে তার শুরুতে চমক না থাকলেও পাঠক অনেক সময় পড়তে থাকেন এই ভেবে যে, এই সামান্য লেখা পড়েই দেখি কী আছে। কিন্তু একটি আস্ত উপন্যাস পড়তে শুরু করতে পাঠককে এটা ভাবতে হয়, এটি শেষ করতে পারব তো? 'জীবনের অষ্টব্যঞ্জন', বেশ ভাবগাম্ভীর্য ও খটমটে নামের উপন্যাসটির প্রথম লাইনটি পড়েই প্যারাটুকু শেষ করার তীব্র ইচ্ছা অনুভব করবেন পাঠক। এবং স্বাভাবিকভাবেই পুরোটা উপন্যাসই শেষও করতে হবে। পিতৃ-মাতৃহীন দুই ভাইয়ের সংসার, সন্তান, এদের পারষ্পরিক সম্পর্ক, সম্পর্কের টক-মিষ্টি-তেতো সফরের উত্থান পতন নিয়েই উপন্যাসটির পথ চলা। এরই মধ্যে একটি ব্যাপার পুরো উপন্যাসেই উঠে এসেছে। তা হলো, পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব, বিশেষ করে সন্তানের জীবন চলার পথে মায়ের আচার-বিচারের অবদান। কিন্তু উপন্যাসটিকে শিক্ষামূলক উপন্যাস ভেবে নিয়ে পাশে সরিয়ে রাখার অবকাশ একদমই নেই। কাহিনির বর্ণনাই এমন ঘটনাবহুল যে এটি পড়া শুরু করলে শেষ করার একটা তীব্র ইচ্ছা হবেই। 'জীবনের অষ্টব্যঞ্জন' উপন্যাসের লেখক জুবাইদা পারভীন লিপির সার্থকতা এখানেই যে, তিনি তার উপন্যাসটির সেই শুরুর চমক দেখিয়ে পাঠককে শেষ পর্যন্ত আটকে রাখতে পেরেছেন। উপন্যাসটির নামকরণও অক্ষরে অক্ষরে সর্বৈব সার্থক। আমি 'জীবনের অষ্টব্যঞ্জন' এর সাফল্য কামনা করি। - ফৌজিয়া খান তামান্না