মাগরিবের আজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নীসা নামাজ পড়ার জন্য বারান্দা থেকে ওজু করতে চলে গেলো, তারপর নিজের শোয়ার ঘরে গিয়ে নামাজ পড়ে নিল। তার স্বামী রাহাত আজ এখনো অফিস থেকে ফেরেনি। এদিকে ঝিরঝির করে বৃষ্টিও হচ্ছে সে কারণে চারপাশের পরিবেশটা কেমন গুমোট হয়ে রয়েছে, কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে নীসার। সে কারণে অনেক সময় বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাহাতের ফেরার অপেক্ষা করছিল সে। বিয়ের পর এই প্রথম সে বাবা-মা ছাড়া একা একটা বাসায় থাকছে আর এই শহরটিও তার কাছে একেবারে নতুন। এ শহরে তাদের পরিচিত তেমন কেউ নেই আর রাহাতের অফিসের কলিগদের স্ত্রীদের সঙ্গে এখনো তেমন আলাপ হয়ে উঠেনি। প্রতিদিন একবার করে বাবা-মা ফোন করে তাদের সঙ্গে কথা বলার পর একেবারে একলা সময় কাটে তার। এদিকে নতুন সরকারি বাসাটাও অনেক বড় আর একেবারে নিরিবিলি পরিবেশ। তাছাড়া বাসার চারপাশে বেশ ঘন ঝোপ আর পুরনো গাছপালায় ছেয়ে রয়েছে। সেই কারণেই কি না বাসার সামনের পথটি দিয়ে তেমন লোকজনও চলাফেরা করে না। কেন জানি বেশির ভাগ লোকজন একটু ঘুরে অফিসের সামনের পথটি দিয়ে চলাফেরা করে। তাই তাদের বাসার চারপাশটা কেমন যেন সুনসান হয়ে থাকে। যদিও রাহাতের অফিস খুব একটা দূরে নয়, বাসা থেকে বেরিয়ে সামনের কিছুদূর গেলে সারি বাধা সরকারি আবাসিক ভবনগুলো পেরোলেই অফিস। এখানে আসার পর থেকে বাসাটাতে একা থাকতে কেমন যেন ভয় ও বিরক্ত লাগছিল নীসার। সে কারণে রাহাত তার মাকে বলে গ্রামের এক বয়স্ক মহিলাকে গত মাসে তাদের বাসায় এনে রেখেছে নীসার সঙ্গে বাসায় থাকার জন্য। তার নাম মহিনী আর বেশ ভালোই বয়সের, প্রায় ষাট-পঁয়ষট্টি বছর বয়সতো হবেই তাই তারা তাকে মহিনী বুড়ি বলে ডাকে। এমনিতে নামাজি মহিলা আর বেশ সহজ সরল মানুষ মনে হয় তাকে।
২০১৮ সালে প্রথম কবিতার বই প্রকাশের মাধ্যমে তার প্রকাশনার সূচনা হয়। এ পর্যন্ত তার আটটি বই প্রকাশিত হয়েছে। পাঠকের অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসা সাথে নিয়ে তিনি সামনের দিনগুলোতে আরও অনেক নতুন নতুন লেখা নিয়ে এগিয়ে যেতে আগ্রহী। কানিজ ফাতেমার জন্ম কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারায়, বাবার নাম জনাব আবুল কালাম ও মায়ের নাম মিসেস আনজেরা বেগম। নিজ জন্মস্থান মফস্বল শহরেই তার শৈশব ও কৈশর কাটে এবং কাটে তার স্কুল ও কলেজ জীবন। অতঃপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, ঢাকা থেকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ২০০৫ সালে বিএসএস (অনার্স) ও ২০০৬ সালে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। অবসর সময়ে তার বই পড়তে ও গান শুনতে ভালো লাগে। ব্যক্তি জীবনে তিনি এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী। আর স্বামী জনাব মোহা: রফিকুল ইসলাম বর্তমানে সরকারের একজন উপসচিব হিসেবে কর্মরত।