একটা বয়সে আমার মনে হয় সবাই কবিতা লিখে বা লেখার চেষ্টা করে। তেমনি আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কয়েকটি কবিতা লিখেছিলাম, সেগুলো আদৌও কবিতা হয়েছে কি না জানি না। লেখার মান নিশ্চয়ই মানসম্মত ছিলো না। যাই হোক এরপর আর লেখা হয়নি। ২০০৭ সালে সরকারী চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করি। প্রকৃতির নিয়মে অতীত জীবনের অধিকাংশ ঘটনা ড়্গীয়মান স্মৃতির ঘর থেকে জীর্ণ পাতার মতো ঝরে গেছে। তা এখন ধূসর ও বিবর্ণ। ভালো-মন্দ যা কিছু সামান্য স্মৃতি এখনো আছে তা আর লিখতে পারবো বলে মনে সাহস পেলাম না। আমার অধিকাংশ কবিতা ওই সময় থেকে লেখা, আমার জীবনের অতীব দুঃখপূর্ণ সময়ে লিখিত অনেক কবিতার মধ্যে তার ছাপ বিদ্যমান। জীবনের আত¥উপলব্ধি থেকেই কবিতার জন্ম। এই উপলব্ধি আর জীবনের বা¯ত্মব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত বিভিন্ন উপকরণগুলোকে সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিকতায় বিশেস্নষণ করা হয়। যাদের হৃদয়ে আবেগ আছে, যারা কবিতা ভালোবাসেন তাদের জন্য আমার ভালোবাসা। আমার স্ত্রী আকতার জাহান রম্নবী ও ছেলে তানভীর মঞ্জুর শাকিল এর সহযোগিতা ও সমর্থনের ফলেই আমি এখনো লিখতে পারছি, কাজ করতে পারছি। এদের কাছে আমি গভীরভাবে ঋণী। কবিতা লেখার বিষয়ে আমার মেঝ ভাই কবি, ছড়াকার, অধ্যাপক আনোয়ারম্নল ইসলাম অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। বইটি প্রকাশনার ব্যাপারে অধ্যাপক আনোয়ারম্নল ইসলাম এবং আমার ভগ্নীপতি লেঃ জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী(অবঃ) উৎসাহ যুগিয়েছেন।
তিনি ১৯৪৯ সালের ২১ই জুলাই মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মো. নূরুল হক (১৯১৩-১৯৯৬) ঐ এলাকার শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে অন্যতম। মা, মোসাম্মৎ রবেদা খাতুন (১৯১৯-১৯৯৭)। তিনি ১৯৬৪ সালে ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট) থেকে ¯্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা দপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করে পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে পূর্ত মন্ত্রণালয়ের ইমারত দপ্তর এবং তৎপরবর্তীতে গণপূর্ত বিভাগে (চ.ড.উ) সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। দেশের বিভিন্ন পদে দীর্ঘ তিন দশকের অধিক সময়ব্যাপী দক্ষতা ও সফলতার সাথে চাকুরী করে ২৯-১২-২০০৩ তারিখে গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর পদে আসীন হন। ২১-০৭-২০০৭ সালে অবসর গ্রহণ করেন। চাকুরী জীবনে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯৮২ থেকে ১৯৮৩ সনে ইরাক সরকারের অধীনে একজন সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সনে দক্ষিণ কোরিয়ায় কনস্ট্রাকশন টেকনোলজির উপর প্রশিক্ষণ সহ পরিকল্পনা, উন্নয়ন, উচ্চতর ম্যানেজমেন্ট ও কারিগরি বিষয়াদির উপরে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করেন। সরকারী প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি, ভারত, সিঙ্গাপুর সফর করেন। স্ত্রী আক্তার জাহান রুবী এমএসএস (অর্থনীতি), ময়মনসিংহ মহিলা কলেজে প্রায় তিন বছর অধ্যাপনা করেন। ছেলে তানভীর মঞ্জুর শাকিল পিএইচডি (ইউ এস এ) বুয়েটের সিভিল ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক। মেয়ে সাবরিনা মঞ্জুর তন্বী এম,এস,সি,ই,ই(কানাডা)। গত ১২ই নভেম্বর ২০১৯ সালে মৃত্যু বরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন)। লেখকের অন্যান্য বই: ‘নিঃশব্দ বিষাদ’, ‘বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)’ ও ‘বিক্রমপুর প্রাচীন জনপদ’