নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তা আপনার ব্যক্তিগত জীবনেই হোক বা সামাজিক জীবনেই হোক। এখন আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সরাসরি উপস্থিত হয়ে নানান কাজকর্ম করার পাশাপাশি ইন্টারনেটের মাধ্যমেও অনেক কাজ করে থাকি। অফিস আদালত, শপিংমলে নিজে উপস্থিত হয়ে যে কাজ করতে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় লাগে, সে কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে করতে মুহূর্ত কয়েক বা বড়জোড় মিনিট কয়েক সময় লাগে মাত্র। এই যে বিপুল পরিমাণ সময়ের সাশ্রয় এবং দ্রুততার সাথে কর্ম সম্পাদন – এর ফলে অফিশিয়াল কাজকর্ম এবং ব্যক্তিগত অনেক কর্মকান্ডেও এই ইন্টারনেট প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে জনপ্রিয়তার সাথে। এই যে ইন্টারনেট প্রযুক্তি, সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারযোগ্য নানানরকম ডিভাইস এবং এর ব্যবহারকারী এই সবকিছু মিলিয়েই হচ্ছে সাইবার বিশ্ব। আধুনিক প্রযুক্তির অপরিহার্য অঙ্গ ইন্টারনেট বিশ্ব বা সাইবার ওয়ার্ল্ডকে নিরাপত্তা দিতেই সাইবারসিকিউরিটির আবির্ভাব। ইন্টারনেট প্রযুক্তি এবং এর সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির প্রসারের পাশাপাশি সাইবারসিকিউরিটির গুরুত্বও অনেক বেড়েছে, বেড়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগও। তাই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস “অনলাইন নিরাপত্তায় সাইবারসিকিউরিটি” বইটি। বইটিতে উদাহরণ দিয়ে সিকিউরিটি লঙ্ঘনের বিষয় উপস্থাপনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের দূষিত সফ্টওয়্যার বা ম্যালওয়্যারের বর্ণনা রয়েছে। বলা হয়েছে, আক্রমণকারী কিভাবে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে অনুপ্রবেশ করে থাকে? কিভাবে আক্রমণের প্রভাব হ্রাস করা যায় তাও আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যাতে অনলাইনে নিরাপদে আর্থিক লেনদেন করতে পারেন তার জন্য রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ের আলোচনা। ম্যালওয়্যার এবং হ্যাকারদের থেকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং সংগঠনকে রক্ষা করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ফায়ারওয়ার এবং নিরাপত্তা যন্ত্রপাতির বর্ণনা। বর্তমানে কর্পোরেট বিশ্বে Denial of Service Attack এবং Distributed Denial of Service Attack অনেকক্ষেত্রেই ভয়াবহরূপ ধারন করতে পারে। এই DoS এবং DDoS আক্রমণ এবং এর প্রশমনের ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে সাইবারসিকিউরিটির এই বইতে। রয়েছে নেটফ্লো (Netflow) প্রযুক্তি এবং সিকিউরিটি প্লেবুক (Security Playbook) এর ধারণা। কম্পিউটারের নিরাপত্তা ঘটনায় সাড়া দেয়ার জন্য CSIRT দলের ভুমিকাতেও আলোকপাত করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আইনি এবং নৈতিক বিষয়সমূহ তুলে ধরার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এবং বাংলাদেশের সাইবারসিকিউরিটি আইন তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে যেসব চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে তাতেও বাংলায় লেবেলিং করা হয়েছে যাতে পাঠকরা সহজেই মূল অর্থ অনুধাবন করতে পারেন। আপনার অনলাইন কার্যক্রমকে নিরাপদ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সকল বিষয়েই আলোকপাত করা হয়েছে এই বইয়ে। কম্পিউটার সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান রয়েছে এমন যেকোনো ব্যক্তি যাতে বিষয়গুলি বুঝতে পারে সেভাবেই বইটির বিষয়বস্তুগুলি লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রী থেকে ব্যাংক এমপ্লয়ি এবং ব্যাংকের গ্রাহক যারা অনলাইনে লেনদেন করে থাকেন তারা সবাই বইটি পড়ে উপকৃত হতে পারেন। আবার কেউ যদি সাইবারসিকিউরিটির উপর কোন সার্টিফিকেট কোর্স করতে চান তবে তিনিও ইনশাআল্লাহ উপকৃত হবেন এই বইটি পড়ে।