দেশভাগের পরিণতিতে কেবল বাঙলা ভাগ হয়নি, ভাগ হয়েছে সিলেটও। সিলেটের মানচিত্রে ব্যবচ্ছেদ চালিয়েছিলেন মি. রেডক্লিপ। তিনি সিলেট জেলার করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, রাতাবাড়িকে জুড়ে দিয়েছিলেন ভারতের আসাম প্রদেশের সঙ্গে। শাহবাজপুরের পাশঘেষেই ছিল পাক-ভারতের সীমারেখা। এই বিভাজনের শিকার হয়ে শাহবাজপুরের পড়শির মতো লাগোয়া লাতু’র স্থান হয় ভারতে। ফলে শাহবাজপুরের সঙ্গে লাতু’র নাড়ির বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ আমলে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানীক অবস্থানে ছিল শাহবাজপুর। পাকভারতের বিভক্তির ফলে সেই শাহবাজপুর হয়ে পড়ে প্রান্তÑ পূর্ব-পাকিস্তানের মানচিত্রের শেষ-ভূমি। এই কারণে, শাহবাজপুরে তৈরি হয় নানা সংকট। তার একটি হচ্ছে শিক্ষা-সংকট। এলাকার একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘লাতু উচ্চ বিদ্যালয়’র অবস্থান হয় ভারতে। এই পরিস্থিতিতে শাহবাজপুরে নতুন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রসারে মনোনিবেশ করেন এলাকার অগ্রণী কতিপয় মানুষ। স্কুলকে কেন্দ্রে রেখে ক্রমেই শাহবাজপুরের আর্থ-সামাজিক জীবনে পালাবদলের হাওয়া বইতে শুরু করে। এর ইতিবাচক প্রভাবে শিক্ষা, সংস্কৃতিতে এগিয়ে যায় এই জনপদ। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে যাওয়ার সেই গল্পই ধরা আছে এই বইতে।
মোস্তফা সেলিম লুপ্ত বর্ণমালা সিলেটি নাগরীলিপি ও সাহিত্য গবেষণা, প্রকাশনা এবং তার নবজাগরণে অনন্য ভূমিকা রেখে দেশে-বিদেশে নন্দিত। তাঁর কাজের মূল্যায়ন করে ‘মোস্তফা সেলিমের নাগরিপ্রেম’ শিরোনামে দৈনিক প্রথম আলো শনিবারের বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে এবং The Daily Star প্রকাশ করে "Keeping an almost extinct script alive, a publisher's story" প্রতিবেদন। দেশে-বিদেশে এ বিষয়ে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁর প্রথম গ্রন্থ মুক্তিযুদ্ধে বড়লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে। তিনি বাংলাপিডিয়া, লিবারেশনওয়ার পিডিয়াসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে কাজ করেছেন। নাগরীলিপির ২৫টি পুথি সম্পাদনা তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ। সম্পাদনা করেন মাসিক ভ্রমণচিত্র। মোস্তফা সেলিমের জন্ম মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায়। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর।