"ইঙ্গ-মার্কিন প্রচারমাধ্যমে বহুকাল ধরেই তালিবানদের নিষ্ঠুরতা আর সহিংসতার কথা শোনা গেছে। বিশ্বের বহু মানুষ তা বিশ্বাস করেছে। কিন্তু তালিবানদের ক্ষেত্রে অনেক ঘটনাবলি ভিন্ন সত্য প্রমাণ করে। সত্যিই তালিবানদের চরিত্র বিশ্লেষণ করা কঠিন। ধর্মীয়ভাবে কট্টর তালিবানদের যে দীর্ঘ লড়াই, সে লড়াইটা কি সন্ত্রাস না কি দেশপ্রেম— সেটারই মূল্যায়ন করার চেষ্টা রয়েছে এই গ্রন্থে। ইঙ্গ-মার্কিন প্রচারের সঙ্গে তালিবানদের চরিত্রের যথার্থ মিল রয়েছে কি না সেটারও একটা চিত্র পাওয়া যাবে এই গ্রন্থে। নারী সম্পর্কে তালিবানদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে। ঘটনা আর তথ্য উপস্থাপন করেই বক্ষ্যমান গ্রন্থটিতে তালিবানদের সম্পর্কে মূল বক্তব্যগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন লেখক। স্বভাবতই বর্তমান গ্রন্থে যা বলা হবে তা কোনো শেষ কথা নয়— এটাও লেখকেরই মন্তব্য। বর্তমান গ্রন্থে বরং কথা মাত্র আরম্ভ করা হয়েছে তালিবান প্রশ্নে। ধার্মিক তালিবানরা কট্টর কি কট্টর নয় সেটা বিচার করা মূল প্রসঙ্গ নয় এই গ্রন্থের। বরং কট্টর বা ধর্মীয়ভাবে গোঁড়া তালিবানদের কিছুটা আন্তরিকতার সঙ্গে চেনার চেষ্টা করা হয়েছে। ইঙ্গ-মার্কিন প্রচারণার বাইরে গিয়ে বুঝতে চাওয়া হয়েছে, তালিবানরা আসলে কারা এবং তাদের উত্থানের পেছনে কোন কোন বাস্তবতা কাজ করেছে। ইঙ্গ-মার্কিনদের প্রচারণার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যখন অনেকেই তালিবানদের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি হিসেবে দেখার বাইরে আর ভিন্ন কোনো পরিচয়ে দেখতে চাইছে না, তখন তাদের মূল অবয়বটা খোঁজার চেষ্টা করেছেন এই গ্রন্থের লেখক। সন্দেহ নেই, তালিবানরা কট্টর, ধর্মান্ধ— কিন্তু সেখানেই কি তাদের পরিচয় শেষ হয়ে যায়? নাকি ভিন্ন একটি পরিচয় আছে তাদের, রচয়িতা সেইখানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। "
রাহমান চৌধুরী। একজন সমাজ-ইতিহাস গবেষক, শিল্প-সংস্কৃতির সমালােচক এবং সর্বোপরি একজন নাট্যকার । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে। ১৯৮১-৮২ সালে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং ২০০৩ সালে একই বিভাগ থেকে স্বাধীনতা। পরবর্তী বাংলাদেশের মঞ্চনাটকে রাজনীতি শীর্ষক অভিসন্দর্ভ রচনার জন্য পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন । রাহমান চৌধুরী শিক্ষা, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, শিল্প-সাহিত্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করেছেন। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পত্রিকায় তার নাটক-চলচ্চিত্র ও শিক্ষা বিষয়ক বহু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ করে নাট্যশিল্প এবং ব্রিটিশ শাসিত বাংলার ইতিহাস ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি বিস্তর লেখালেখি করেছেন। বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। থেকে তাঁর প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ মঞ্চ-নাটকের সংখ্যা দশের অধিক এবং ইতিহাস-রাজনীতি, শিল্প-সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিষয়ে রচিত গবেষণা। প্রবন্ধের সংখ্যা চল্লিশের অধিক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতি সংক্রান্ত পরামর্শক হিসেবে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। তিনি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা, যােগাযােগ ও সংস্কৃতি বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন।