মানুষ কি কখনও গাছ হয়? হয় না। কিন্তু গাছের মতো সর্বংসহা মানুষ এই সমাজে কখনও কখনও আসে। যারা নিজের দেহের ফাটল খুলে অতিথি পাখিদের আশ্রয় দেয়, ওম দেয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। পাখিরা প্রায়শই এর মূল্য বোঝে না। গাছের ফল খায়, গাছের বুকে আশ্রয় নেয় কিন্তু সুবিধার ঋতু পেলে উড়ে চলে যায় নতুন কোনো দেশে। গাছের এতে কোনো অভিমান নেই। সে তার দেহের ফাটল অবলীলায় খুলে দেয় নতুন পাখির জন্য। পুরনো পাখি ফিরে এলেও মুখ ফিরিয়ে নেয় না। এমন নিঃস্বার্থ মানুষের আগমন প্রত্যাশা করেন কবি, সবাইকে গাছ হতে বলেন। তবে তিনি এ-ও বলে, কখনও নুয়ে পড়ো না পথচারীর পায়ের ওপর, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকো। এখানেই কবিতার মূল বক্তব্যটি প্রোথিত। বাংলা কবিতা কতদূর এগোলো তা বোঝার জন্য যার কবিতা পড়তে হয় তিনি কাজী জহিরুল ইসলাম। "গাছ হও" আমাদের সেই ইঙ্গিতই দেয়। কবিতাক্রম মানুষ ৯ ফল ১০ মেঘেরা ক্রমশ তুলে আনে ১১ তৃষ্ণা ১২ পায়ের সন্তান ১৪ ছায়াচিন্তা ১৫ পদধ্বনি ১৬ নেতা ১৭ আপেলাখ্যান ১৮ যুদ্ধ ১৯ ফুলদানি ২০ শাদা গ্রন্থ ২১ রান্নাঘর ২২ তোমার সঙ্গে ২৩ এই তো সমুদ্দুর ২৫ সাবওয়ে স্টেশন ২৬ অবচেতন অথবা নামহীন ২৮ আত্মত্যাগের সমুদ্র ৩০ কবিতাকে নিয়ে যাব ৩১ উত্তরাধিকার ৩৩ পুরনো আয়না ৩৪ সবকিছু মুছে যায় ৩৫ বাতি নেভানোর পরে ৩৬ জেলখানা ৩৭ নদীরা ৩৮ পরাগায়ন ৩৯ বার্নাকল ৪০ দৃষ্টি ৪১ গ্রন্থের চোখ ৪২ ডুব ৪৩ কবিতা ৪৪ আকাশের যুদ্ধ ৪৬ রুপার কফিন ৪৭ নির্জন গ্রীষ্মের রাত ৪৮ শূন্যের পঞ্চক ৪৯ সকালের প্রতীক্ষায় ওমর ফারুক ৫১ ক্রীতদাস ৫৩ সোজা হয়ে দাঁড়াতে শেখেনি ৫৪ গাছ হও ৫৫ উপমা ৫৬ বন্ধু ৫৭ মৃতদেহ ৫৮ আয়ুর জন্য প্রতিবাদ ৬০ সেই পাখি ৬২ কোথায় যাবে তুমি ৬৩ দুটি আই ৬৪ পরকীয়া মন ৬৭ অনিদ্রা ৬৮ মাতালের পদ্য ৬৯ হেঁটে হেঁটে ফেরা ৭০ নষ্ট প্রবাহ ৭১ স্বাধীনতা ৭২ মিথ্যার উৎসব ৭৩ আপেল আখ্যান ৭৪ ফুলের গন্ধে মশগুল ৭৫ অসুখ ৭৬ গাছের ভেতরে গাছ ৭৭ মেঘের তো নেই খোঁজ ৭৮ শেষ বিকেলের গান-২৩ ৭৯ শেষ বিকেলের গান-২৪ ৮০
কাজী জহিরুল ইসলাম। লিখেন গল্প, কবিতা, ভ্রমণকাহিনি ও প্রবন্ধ। পেশাগত প্রয়ােজনে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভ্রমণ করেছেন পৃথিবীর বহু দেশ। দীর্ঘ দিন খণ্ডকালীন সাংবাদিকতা করেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহ : উড়ালগদ্য (কলাম), বিহঙ্গপ্রবণ (আত্মজৈবনিক উপন্যাস), জানা-অজানা আফ্রিকা (ভ্রমণ), গজমােতির দেশ আইভরিকোস্ট (ভ্রমণ) After a Long way (কাব্যগ্রন্থ), ছয় ঠ্যাংঅলা নীল সাপ (গল্প) ইত্যাদি। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি জসীমউদ্দীন পুরস্কার ১৪০৬ এবং ভ্রমণ সাহিত্যে ড. দীনেশ চন্দ্র সেন পদক ২০০৮-এ ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে জাতিসংঘের একজন আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা হিসেবে আমেরিকায় কর্মরত। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। স্ত্রী মুক্তি, পুত্র অগ্নি এবং কন্যা জলকে নিয়ে লেখক বসবাস করছেন কাব্যময় সংসারে।