ঢাকা শহরের সবচে বড় বিদ্যালয় যোজন যেন একখণ্ড রাষ্ট্র। আর এই যোজনেই আজ ঘটতে চলছে এক অপ্রত্যাশিত আখ্যান। কিন্তু এর কারণ কী? অতিমারী? না কি জৌলুশের অন্তরালে যোজনের সামাজিক অনাচার? যোজনের বৈষম্য-দুর্নীতি-অনাচারের স্টিমরোলারে পতিত উপন্যাসের রহস্যময় প্রটাগনিস্ট অরিত্র পাঁচ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলো তার দলিলের খসড়া, যোজনের ভূখণ্ডেই বাংলাদেশের প্রথম স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠনের কাঠামো এবং এর কার্যকারিতা। কে এই অরিত্র? যে বয়সে তার সহপাঠীরা গেইম, পর্ন আর বান্ধবী নিয়ে ব্যস্ত, সেই বয়সে অরিত্র আর বন্ধু জারিফ ব্যস্ত সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায়। এই অরিত্রের দিকেই ‘মেয়েলি’, ‘হিজড়া’ প্রভৃতি শব্দগুলো অসম্মানজনকভাবে ছুড়ে দিয়ে তাকে বিপর্যস্ত করেছিলো অন্যেরা, তাদের উপরেই আবারঅরিত্র ভোটে জিতে অগ্নিগিরির রূপ ধারণ করে, যেন সমাজে সাদা আর কালোর সমান্তরাল অস্তিত্বের সাক্ষী সে। না কি এই উপন্যাসের আসল প্রটাগনিস্ট বন্ধু জারিফ, যে অরিত্রকে ক্ষমতার কৃষ্ণগহবরে পা বাড়াতে জারিফ নিষেধ করেছিলো? কিন্তু কেন? এসমস্ত আখ্যান বর্ণনা করতে গিয়ে সবকিছুর নাটের গুরু হিসেবে ক্ষমতা-কে এবং ক্ষমতার রক্ষাকবচ বলতে বাহ্যিক কেতাদুরস্ত এক ছককে চিহ্নিত করেছেন ঔপন্যাসিক তানভির অনয় তার তৃতীয় উপন্যাস ‘কেতাদুরস্ত’-তে।
তানভির অনয় একজন লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী। ১১ই ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় জন্ম তাঁর। ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেইটভিল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি ভাষা ও অনুবাদ নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন। লৈঙ্গিক বৈষম্যসহ আর্থ-সামাজিক সমস্যা ও সমাধান নিয়ে তিনি লেখালেখি এবং কাজ করেন। ইতোমধ্যে তিনি একাধিক প্রকাশনার সম্পাদনা করেছেন। কথাসাহিত্যের জগতে তাঁর আগ্রহ প্রবল, লিখেছেন বেশ কিছু ছোট গল্প। ‘পুণ্যাহ’ তাঁর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস।