লেখক বাংলা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। অধ্যয়নকালে রাজশাহী-ঢাকা এবং চাকুরিকালে পাবনা-সিলেট-নওগাঁ-ঢাকা ইত্যাদি অঞ্চল সম্পর্কে ভালোভাবেই জেনেছেন। সে সমস্ত স্থানে শিক্ষক ও শিক্ষক ব্যতীত বহু বিখ্যাত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতি শাহবুদ্দিন, সমালোচক সুবোধ সেনগুপ্ত, চিন্তাবিদ কাজী আবদুল ওদুদ, কাজী মোতাহার হোসেন, বরকত উল্লাহ, সাহিত্যিক মুনীর চৌধুরী, মোহিত লাল মজুমদার, কবি জসীম উদ্দীন, লেখক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ সহ আরও অনেক স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তিত্ব। এসব জায়গা এবং এসব ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে রচিত স্মৃতিকথা পৃথিবীর পথে। পাঠক তা পাঠকালে শুধু ঐতিহাসিক তথ্যই পাবেন না, তার সাথে পাবেন প্রতিভাদীপ্ত স্মৃতিকথা পাঠের আনন্দ। তিনি একজন সাহিত্যিক যাঁর রয়েছে পরিচ্ছন্ন চিন্তা, শক্তিশালী যুক্তি, শৈল্পিক উপস্থাপনা Ñ সর্বোপরি রসবোধ। মুহম্মদ আব্দুল লতিফ চৌধুরী (জন্ম: ২৪ অক্টোবর ১৯২২- মৃত্যু: ২৩ জুন ১৯৯৫) পাংশা থানার হাবাসপুর কাশিম বাজার রাজ হাই স্কুল থেকে ১৯৪৩ সালে লেটার সহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করার পর রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়ে ১৯৪৯ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫০ সালে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা বেসরকারি জগন্নাথ কলেজ ও পরে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে (বেসরকারি) অধ্যাপনা করেন। এই বছর ডিসেম্বর মাসে তিনি সরকারি সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজে যোগদান করেন এবং সেখানে ১০ বছর অবস্থান করেন। তারপরে ১৯৫৯ সালের জুলাই মাসে ঢাকা কলেজে আসেন। এখানে ১২ বছর অধ্যাপনার পর ১৯৭০ সালের শেষের দিকে প্রমোশন পেয়ে তিনি রাজশাহী কলেজে যান। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় বার প্রমোশন পেয়ে রংপুর সরকারি কার মাইকেল কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে যান। ১৯৮১ সালে নওগাঁ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করে সেখানে এক বৎসর অবস্থান করেন। ১৯৮২ সালের প্রথম দিকে বদলি হয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে যান এবং অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩ সালের প্রথম দিকে তিনি সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করে ঢাকায় ফিরে আসেন এবং চার বছর ঢাকা মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীন ও মধ্যযুগ (১৯৫১), কবি কায়কোবাদ (১৯৫২), শহীদের কারবালা (কাব্যগ্রন্থ), কয়েকটি তারা (কাব্যগ্রন্থ) উল্লেখযোগ্য।