রেহানার বেশ খিদে পেয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় দু'মুঠো ভাত খেয়েছিল হেলেঞ্চা শাক দিয়ে। সেই খাবারে এই দুপুর পর্যন্ত! সকালে রান্না করেনি সমীরণ। ঘরে চাল নেই। কয়েক মুঠো পান্তা ভাত ছিল। তা রহিম আর সমীরণ ভাগাভাগি করে খেয়েছে। যদিও সে খাবার দু'জনের জন্য যথেষ্ট নয়। রেহানা পান্তা ভাত খেতে চায় না। টিনের কৌটায় অনেকদিন পরে থাকা একখান বিস্কুট ছিল। সমীরণ রেহানার হাতে তুলে দিতেই তা ছুড়ে ফেলে দেয়। তাই সে সকাল থেকেই অভুক্ত। এখন সময় দুপুর দু'টো। তার এখন ভাত চাই। সমীরণ বিবি পাবে কোথেকে। আর রেহানা কী আর বোঝে যে সমীরণের চালের হাঁড়ি বাড়ন্ত। রেহানাতো ছোট মানুষ তাই পেটের ক্ষুধার দৈত্যকে আর মানাতে পারছে কই। ক্ষুধাতো খুবই স্বার্থপর। খাবার ছাড়া আর কিছু চাই না তার। ছোট্ট রেহানা আর কত পারে! এ বেলা খাবার জুটে তো অন্যবেলা অনাহারী। যে বেলা জোটে তাও আবার আধপেটা। রহিমের ভাগ্যের সচল চাকা খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যায়। পরিহাসের হাসি হাসে দুর্ভাগা নিয়তি। দুর্বিষহ যন্ত্রণা গ্রাস করে পরিবারকে। রহিমের বিয়ের কয়েকমাস পরেই তার জননী ইহলোক ত্যাগ করে। এই মৃত্যুর জন্য অনেকে সমীরণ বিবিকেই দোষারোপ করে। তার জন্যই নাকি রহিমের মা রুমিজান বিবি মৃত্যুবরণ করেছে। সে নাকি অপয়া। সমীরণ এ ঘরের বউ হয়ে না আসলে নাকি এত তাড়াতাড়ি রহিমের মায়ের মৃত্যু হতো না। গ্রামের মহিলারা এ বিষয়ে বেশ বলাবলি করতো। তারা যখন ঘাটে গোসল করতে আয়তো তখন বেশ সমালোচনা হতো। সমীরণ পুকুর ঘাটে গেলেই কানাকানি করতো। সে শুনেও কিছু বলতো না। নিজের কাজ করে চলে আসতো। কোনো প্রত্যুত্তর করতো না।
জন্ম ২৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৯, শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার কাশিপুর হিন্দুপাড়া গ্রামে। তিনি কম্পিউটার সায়েন্সে সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ "আলোর মিছিল" ২১ শে বইমেলা ২০১৬ তে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি সনাতন ধর্ম বইয়ের উপর লেখালেখি করে থাকেন। তাঁর দ্বিতীয় বইটি শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী।