বিষয়টা সাম্প্রতিক সময়ের। সম্পর্কের কিছু চিরায়ত সত্য। স্বাভাবিক কাহিনির পেছনেও অন্য কাহিনিক্রম। চলমান সংস্কারের বিপরীতে ভিন্ন এক বিকল্প স্রোতে চলার নিরুপায় অভিলাষ। স্ত্রী সোমার সাথে দূরত্বের প্রেক্ষিতে আবিরের ভেতরে এক আত্মজিজ্ঞাসা, পরবর্তীতে সহকর্মী নায়লার সাথে নির্বাক অনুরাগের টানে এক তটরেখা পাওয়া। মুহিবের সাথে সোমার পূর্বপ্রেমের আবেশে যে জলছাপ হৃদয়ে প্রোথিত, আবিরকে সেখানে না বসিয়ে অতীতের স্মৃতি আচ্ছন্নতায় অনেকটা অজান্তেই যেন স্বামী হতে দূরে সরে গেল নে। আবির এগিয়ে আসলেও চিরধরা ফাটলটা গভীর হতে হতে সান্নিধ্য, বিশ্বাস, আস্থাকে গ্রাস করে নিল। স্বভাবজাত স্পৃহা আর তার স্বাশ্বত সাধনা প্রচলিত মানব চরিত। সোমার চরিত্রের বৈপরীত্যে নিত্যই পিছু হটে যাওয়া আবিরের ক্ষয়িষ্ণু সময়ে নায়লার সলাজ উপস্থিতি দুঃসময় শুষে নিয়ে তাকে আবার যেন ভালোবাসার নতুন এক দিশা দেয়। জায়মার টানে চলে যাওয়া রাহাতের সাথে তার বিচ্ছেদ-উত্তর দিনগুলোয় আবিরের এ নির্বাসনকালের মিলন নতুন সময়ের সামনে নায়লাকে নিয়ে এলো। এক নতুন প্রশ্নের উদয়-তবে কি আরও কিছু বাকি? নব পরিণয়ের পরেও রাহাতের মানসপটে অনুপস্থিত নায়লার বিরাজ-জায়মার সাথে তার সম্পর্ককে প্রশ্নের সম্মুখীন করে। কাউকে বিস্মৃত হতে চাইলেই কি সম্ভব, না তার অস্তিত্ব আরও প্রকটতর হয়? মুহিবের প্রতি সোমার পূর্বানুভূতি জানার পরেও আবির সন্তানদের স্বার্থে স্বাভাবিক হতে চায়, সোমার অনিচ্ছায় তা আর হয়ে ওঠে না। তবে সবার সবকথা শেষে এসে এক বিন্দুতে দাড়ায় যখন আবিরকে করোনার আকস্মিক টান সব উত্তর পাওয়ার আগেই দূরে সরিয়ে নেয়। শুধু রয়ে যায় সন্ধিক্ষণে থাকা, প্রায় চেতনাহীন এক প্রাণকে ঘিরে প্রশ্নের আকুলতা, অনেক উত্তরের তরে অনন্ত অপেক্ষা।