এই গ্রন্থ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৫ সালে। ১৯৮০ দশক থেকে বিশ্বব্যাপী নব্য উদারতাবাদী নামে যে পুঁজিপন্থী সংস্কার বেগবান হয় তার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও অর্থনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্রের একটি নির্দিষ্ট গতিমুখ স্পষ্ট হতে থাকে। তারই অনুসন্ধান করা হয়েছে এই গ্রন্থের বিভিন্ন অধ্যায়ে। শিল্পখাতের গতিমুখ, পেশার পরিবর্তন, শিক্ষার গতিপ্রকৃতি, জ্বালানি সম্পদ, বিদেশি সাহায্য, নব্য ধনিক শ্রেণী, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, সামরিকীকরণ শিরোনামের লেখাগুলোতে এই নির্দিষ্ট যাত্রাপথের গোপন প্রকাশ্য ধরন স্পষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে।’... ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিমুখ নির্দেশ করছে বিশ্বায়িত পুঁজিবাদের অধীনে, পুঁজির আন্তর্জাতিকীকরণ প্রক্রিয়ায়, একটি প্রান্তস্থ পুঁজিবাদী দেশের ভঙ্গুর, অনিশ্চিত, সন্ত্রাসী দোকানদারী ও দখলদারী চেহারা। আপাতঃ দৃষ্টিতে যা নৈরাজ্যিক কিন্তু যা বৈশ্বিক ও স্থানীয় শ্রেণী আধিপত্যের এবং সেইসঙ্গে নতুন নতুন সামাজিক শক্তির উদ্ভবের নিশানা দেখায়। এই গতিমুখ বিশ্লেষণ, অতএব, আমাদের অনেক বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হতে, ‘উন্নয়ন’ কুয়াশা সরিয়ে সমাজ অর্থনীতির প্রকৃতি যাত্রা উপলব্ধি করতে এবং সেই হিসেবে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ লড়াইয়ের মানুষদের সনাক্ত করতে সচেষ্ট।
(জন্ম: ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬) পুরো নাম আনু মুহাম্মদ আনিসুর রহমান হলেও আনু মুহাম্মদ নামেই অধিক পরিচিত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক। ঢাকায় লেখাপড়া শেষ করে ১৯৮২ থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে যোগদান করেন। এছাড়া একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগেও শিক্ষকতা করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী শোষণ, বৈষম্য, নিপীড়ন ও আধিপত্য বিরোধী তত্ত্বচর্চা ও লড়াইয়ে সক্রিয় অংশ নেন। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনসহ যে কোন প্রকার নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তিনি তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব। বাংলাদেশে মার্কসীয় অর্থনীতি ও রাজনৈতিক অর্থনীতি সংক্রান্ত আলোচনায় তিনি সবচেয়ে পরিচিত লেখক।