উনিশ শতকে ব্রিটিশভারতে যেকজন বাঙালি মনীষী ও হিতৈষী জন্মগ্রহণ করেছিলেন সৈয়দ শামসুল হুদা (১৮৬২-১৯২২) তাঁদের মধ্যে নক্ষত্রপ্রতিম। বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের প্রথম ভারতীয় এবং সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বাঙালি মুসলমানের মধ্যে ছিলেন হাইকোর্টের দ্বিতীয় বিচারপতি। প্রথম ছিলেন সৈয়দ আমীর আলী। সৈয়দ শামসুল হুদার চারিত্র্যবন্দনা করেছেন সমকালীন বিভিন্ন ব্যক্তি এবং পত্রপত্রিকা। দ্য বেঙ্গলির মন্তব্য এখানে প্রণিধানযোগ্য : ‘তাঁর মধ্যে ছিল একজন ভারতবাসীর পরিমার্জিত স্বভাব এবং মানবিক মহান অনুভ‚তির দ্রুত প্রকাশ। চরিত্রের এই দুর্লভ গুণাবলি তিনি অর্জন করেছিলেন উদারনৈতিক প্রশিক্ষণ থেকে।’ তাঁর কর্মময় জীবন-দেশ ও জাতি গঠনে পথনির্দেশ করে। ... সৈয়দ শামসুল হুদা মাত্র ষাট বছর বেঁচেছিলেন। রেখে গেছেন অসামান্য কর্মখ্যাতি ও অতুলনীয় কীর্তি। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, তাঁর জন্মশতবর্ষ অথবা মৃত্যুর পঞ্চাশ বছরপূর্তিতে তাঁকে স্মরণ করা হয়নি। কোনও স্মরণিকাও আমাদের চোখে পড়েনি। কেন? এ কি ‘খ্যাতির বিড়ম্বনা'? সৈয়দ শামসুল হুদা জীবন ও সমকাল তাঁর মৃত্যুশতবর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে তাবেদার রসুল বকুলের দীর্ঘ দিনের গবেষণার ফসল।
তাবেদার রসুল বকুল - একজন নিষ্ঠাবান, পরিশ্রমী এবং অঙ্গীকারাবদ্ধ কবি-গবেষকসংগঠক। বকুলের পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গুনিয়াউক গ্রামে। বকুলের জন্য সিলেটে। পড়াশােনা করেছেন সিলেট ও কুমিল্লায়। বাংলা একাডেমীর সদস্য, দেশের অন্যতম প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম। সাহিত্য সংসদের পৃষ্ঠপােষক সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে ঘনিষ্টভাবে জড়িত। ব্যক্তিগত ভ্রমণ এবং গবেষণার খাতিরে বিভিন্ন সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরেছেন। তাঁর জীবনের স্মরণীয় । মুহূর্তগুলাে হচ্ছে ব্রিটিশ লাইব্রেরি, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, মিডল টেম্পেলসহ ব্রিটেনের বিভিন্ন আর্কাইভ, ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব ইন্ডিয়া-য় গবেষণার জন্য দিনের পর দিন অবস্থান। এ পর্যন্ত তাঁর কবিতা, গল্প ও । গবেষণামূলক এগারটি বই বেরিয়েছে। ব্যারিষ্টার আব্দুল রসুল: জীবন ও কর্ম গ্রন্থটি তাঁর দীর্ঘদিনের পরিশ্রমী গবেষণার ফসল।