মাহবুব তালুকদার বাংলাদেশের কথা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান রূপকার ও ছোটগল্পের পারঙ্গম লেখক । ‘ চমক রহম ' তাঁর দশম গল্পগ্রন্থ । এতে মোট ১২ টি গল্প সংকলিত হয়েছে । প্রতিটি গল্পই আপন মাহাত্ম্য ও বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জল । প্রথম গল্পটি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জীবনচিত্র , যা ইংরেজিতে অনুদিত হয়ে সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । পরবর্তী দু'টি গল্প ‘ বৃক্ষজীবন ’ ও ‘ নদীজীবন ’ কথাশিল্পের মাধ্যমে পরিবেশবাদের অনন্য উদাহরণ । এছাড়া ‘ পক্ষীজীবন’সহ অন্যান্য গল্প লেখকের পরিণত লেখনীর সৃষ্টি - সম্ভার । ‘ চমক রহম ’ গল্পটিও এক আধুনিক মনন ও অভিব্যক্তির মানবিক দলিল । মাহবুব তালুকদারের গল্পে বিষয়বৈচিত্র , ঘটনাবিন্যাস , চরিত্র - চিত্রণ ও বর্ণনারীতির নৈপুন্য পাঠককে নিয়ে যায় মনোলোকের কোনো গভীর গোপন প্রকোষ্ঠে , যেখানে অন্তরপ্রবাহের বিচিত্র প্রকাশ পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে । তাঁর গল্প নর - নারীর জীবনের পারস্পরিক সম্পর্কের জটিল গ্রন্থী উন্মোচনের মনোগ্রাহী আলেখ্য । নিটোল গল্প রচনার জাদুকরি লেখনীর অধিকারী মাহবুব তালুকদারের প্রতিটি গল্পই জীবন অবলোকনের এক অনুপম আস্বাদন । ‘ চমক রহম ' বাংলা কথাসাহিত্যের এক চমকপ্রদ সংযোজন ।
Mahbub Talukdar- জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৪১। কর্মজীবনের প্রারম্ভে দৈনিক ইত্তেফাক-এ সাংবাদিকতা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োজিত থাকলেও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকালে তিনি মুজিবনগর সরকারে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রথম চারজন রাষ্ট্রপতির অধীনে তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় কাজ করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। মাহবুব তালুকদারের বইয়ের সংখ্যা ৪১। তাঁর উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থগুলো হচ্ছে : মূর্ত ও বিমূর্ত, প্রকাশ্য গোপন, স্বপ্ন জড়ানো মানুষ, ইতির ইতিকথা, অরূপ তোমার বাণী।